টেলিভিশন টক শোতে নারী সাংবাদিককে নিয়ে অশালীন কথা বলায় মানহানির মামলায় গ্রেফতার সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে যথাযথ নিরাপত্তা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
পৃথক দুটি রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে সোমবার (১৯ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি রেফাত আহমেদ এবং বিচারপতি ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
সংশ্লিষ্ট সকলকেই এ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। বিশেষ করে রংপুরের পুলিশ কমিশনার, কারারক্ষী, জেল সুপারকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এ ছাড়াও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজির মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) কর্তৃপক্ষকে একটি বোর্ড গঠন করে মইনুল হোসেনের চিকিৎসার বিষয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন। সঙ্গে ছিলেন অ্যাডভোকেট মো. মাসুদ রানা। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এর আগে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের নিরাপত্তার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে গত ৬ নভেম্বর তার স্ত্রী সাজু হোসেন রিট করেন। এ ছাড়া তার চিকিৎসার বিষয়ে নির্দেশনা চেয়ে ওই একই তারিখে তার স্ত্রী আরেকটি রিট করেন। এরপর রিট দুটি সোমবারের কার্যতালিকায় এলে শুনানি নিয়ে আদালত এ আদেশ দিলেন।
প্রসঙ্গত, গত ১৬ অক্টোবর রাতে একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের টক শোতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টিকে উদ্দেশ্য করে ‘চরিত্রহীন’ মন্তব্য করেন। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় ওঠে। মাসুদা ভাট্টিসহ নারী সাংবাদিকরা মইনুল হোসেনকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান জানান। ঘটনার চার দিনেও ব্যারিস্টার মইনুল প্রকাশ্যে ক্ষমা না চাওয়ায় তার বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মানহানির মামলা করেন মাসুদা ভাট্টি।
মইনুলের মন্তব্যকে নারী সমাজের জন্য অবমাননাকর দাবি করে একই অভিযোগে তার বিরুদ্ধে জামালপুরের আদালতেও মামলা করেন এক নারী। যদিও ওই দুটি মামলায় তিনি উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেন। তবে একই ঘটনায় কুড়িগ্রাম ও রংপুরের আদালতেও পৃথক মামলা হয়। এর মধ্যে রংপুরের মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।
পরে গত ২৩ অক্টোবর মইনুলকে আদালতে হাজির করা হলে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট কায়সারুল ইসলাম। এরপর সেদিন বিকেলে ঢাকার কেরানীগঞ্জে কেন্দ্রীয় কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয় ব্যারিস্টার মইনুলকে। এরপর গত ৩ নভেম্বর ব্যারিস্টার মইনুলকে রংপুর কারাগারে পাঠানো হয়। গত ৫ নভেম্বর তাকে রংপুরের আদালতে হাজিরের সময় বিএনপি ও আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ, ককটেল বিস্ফোরণ, অস্ত্রের মহড়ার ঘটনায় ঘটে। পরে মইনুলের নিরাপত্তা চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন তার স্ত্রী সাজু হোসেন।