সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে আর্জেন্টিনার একটি আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। চলতি সপ্তাহের শেষের দিকে দেশটির রাজধানী বুয়েন্স আয়ার্সে জি২০ সম্মেলনের আগে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) আর্জেন্টিনার ফেডারেল বিচারকের আদালতে এই মামলা দায়ের করেছে।
এইচআরডব্লিউর এক বিবৃতিতে সোমবার (২৬ নভেম্বর) বলা হয়েছে, সৌদির আটক নাগরিকদের নির্যাতন, সাংবাদিক জামাল খাশোগি হত্যাকাণ্ড ও ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের হামলার মতো যুদ্ধাপরাধের ঘটনায় সৌদি যুবরাজের সংশ্লিষ্টতা আছে কি-না তা মূল্যায়ন করছে আর্জেন্টিনা কর্তৃপক্ষ।
গত ২ অক্টোবর তুরস্কের ইস্তাম্বুলে সৌদি কনস্যুলেটে প্রবেশের পর নিখোঁজ হন মার্কিন দৈনিক ওয়াশিংটন পোস্টের কলামনিস্ট ও সৌদি রাজ-পরিবারের সমালোচক সাংবাদিক জামাল খাশোগি। নিখোঁজের অভিযোগ উঠার পর সৌদি আরব জানায় দূতাবাস থেকে বেরিয়ে গেছেন তিনি।
এর কয়েক সপ্তাহ পর সৌদি কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক জামাল খাশোগি কনস্যুলেটের ভেতরে খুন হয়েছেন বলে স্বীকার করে। ওই সময় জানানো হয়, সৌদি কনস্যুলেটে কর্মকর্তাদের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডার পর হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়েন খাশোগি। পরে শ্বাসরোধে মারা যান তিনি।
তবে সৌদি যুবরাজের নির্দেশে ১৫ সদস্যের এক কিলিং স্কোয়াড তুরস্কে উড়ে গিয়ে ওইদিন সাংবাদিক জামাল খাশোগিকে হত্যার পর টুকরো টুকরো করেছে বলে অভিযোগ তুরস্কের। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সৌদি বলছে, হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে যুবরাজ আগে থেকে কোনো তথ্য জানতেন না।
এইচআরডব্লিউ নির্বাহী পরিচালক কেনেথ রথ বলেছেন, আর্জেন্টাইন কর্তৃপক্ষের এই তদন্ত একটি শক্তিশালী বার্তা দেবে যে, যুবরাজ সালমানের মতো ক্ষমতাধর ব্যক্তিরাও আইনের ঊর্ধ্বে নন। বিন সালমানের জানা উচিত যে তিনি যদি আর্জেন্টিনায় যান; তাহলে তাকে ফৌজদারি তদন্তের মুখোমুখি হতে হবে।
আর্জেন্টিনার আইন বিশ্বের যেকোনো প্রান্তে যুদ্ধাপরাধ ও নির্যাতনের ঘটনা তদন্তের ক্ষমতা দেশটির বিচার বিভাগকে দিয়েছে। এই দেশটিতে প্রবেশের পর এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদও করতে পারে আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগ। সূত্র : আনাদোলু।