প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, বিচারক একা ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন না। বিচারের সবপর্যায়ে আদালতের আইনজীবীর সহায়তার প্রয়োজন হয়। তাই বিচারক ও আইনজীবী উভয়কেই তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে। জ্ঞানের চর্চার মাধ্যমে সমাজ ও রাষ্ট্রের পূর্ণাঙ্গ বিকাশে এবং মানুষের অধিকার রক্ষায় কাজ করতে হবে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস-২০১৮ উদযাপন উপলক্ষে জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্সে এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেন, এখন আমাদের সামনে রয়েছে অনেক বড় চ্যালেঞ্জ। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় সুপ্রিম কোর্ট ও অধস্তন আদালতগুলোর দৃঢ় অবস্থান জনগণের মধ্যে আদালত সম্পর্কে গভীর আস্থার সৃষ্টি করেছে। অন্যদিকে জনগণ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি অধিকার সচেতন। এ দুইয়ের কারণে দেশের আদালতগুলোয় মামলা দায়েরের পরিমাণ এখন আগের দশকের চেয়েও অনেক বেড়ে গেছে। কিন্তু যে হারে মামলার পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে, সে হারে দেশে বিচারকের সংখ্যা বাড়েনি। বাড়েনি অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা। ফলে বিচারকদের মামলা নিষ্পত্তি করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
চলতি বছরের মামলার পরিসংখ্যান নিয়ে প্রধান বিচারপতি বলেন, আমার উদ্যোগের ফলে এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সারা বাংলাদেশে উচ্চ ও অধস্তন আদালতে মোট দায়ের হওয়া ১৩ লাখ ৭১ হাজার ৪৫৬টি মামলার বিপরীতে আট লাখ ৮৬ হাজার ২৯৬টি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। বর্তমানে মামলার ক্লিয়ারেন্স রেট ৬৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। মাত্র এক হাজার ৭০০ বিচারকের সমন্বয়ে গঠিত বাংলাদেশ জুডিশিয়ারির জন্য এটি একটি মাইলফলক অর্জন বলে আমি মনে করি। হাইকোর্ট বিভাগে প্রতি বৃহস্পতিবার ১৪টি বেঞ্চে মিস মামলা শুনানির জন্য নির্দেশ দিয়েছি। এতে করে জমে থাকা মামলার পরিমাণ কমে যাবে এবং মূল মামলা নিষ্পত্তিতে অধিক সময় ব্যয় করার সুযোগ সৃষ্টি হবে। মামলা ব্যবস্থাপনার জন্য আমরা এমন আরও অনেক বাস্তবভিত্তিক পদক্ষেপ গ্রহণ করছি।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট দিবস উদযাপন সংক্রান্ত জাজেস কমিটির সভাপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতি মির্জা হোসেইন হায়দার, অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি জয়নুল আবেদীন।