একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন গতকাল রোববার (৩০ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারাদেশে একযোগে সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে বিকেল চারটা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলে। ভোট শেষে গণনার পর একে একে আসতে থাকে ফল। নির্বাচনে নিরঙ্কুশ বিজয় পেয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। এই বিজয়ের মধ্য দিয়ে দলটি ইতিহাস গড়তে যাচ্ছে; একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা নতুন রেকর্ড করে টানা তৃতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হতে যাচ্ছেন।
নির্বাচন কমিশন (ইসি) ২৯৮টি আসনের বেসরকারি ফলাফল ঘোষণা করেছে। এতে ২৫৯টি আসন পেয়েছে আওয়ামী লীগ। এইচ এম এরশাদের জাতীয় পার্টি (জাপা) পেয়েছে ২০টি আসন। বিএনপি পেয়েছে ৫টি আসন। ওয়ার্কার্স পার্টি ৩টি আসন পেয়েছে। জাসদ পেয়েছে ২টি আসন। বিকল্পধারা ২টি আসন পেয়েছে। গণফোরাম পেয়েছে ২টি আসন। তরিকত ফেডারেশন ও জেপি পেয়েছে ১টি করে আসন। স্বতন্ত্র প্রার্থীরা পেয়েছেন ৩টি আসন।
জোটগতভাবে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট পেয়েছে ২৮৮ আসন। আর ঐক্যফ্রন্ট পেয়েছে মাত্র ৭টি আসন।
জাতীয় সংসদ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইনসভা। ফলে সংসদে আইনজীবীদের প্রতিনিধিত্ব যেকোন দৃষ্টিকোণ থেকেই ইতিবাচক। এবারের সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের হয়ে অর্ধশতাধিক আসনে আইনজীবীরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও বিজয়ী হয়েছেন ২৭ জন। এরমধ্যে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে ২২ জন এবং জাতীয় পার্টি থেকে পাঁচজন আইনজীবী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট থেকে নির্বাচিত আইনজীবী সংসদ সদস্যরা হলেন– নাটোর-৩: জুনাইদ আহমেদ পলক, চাঁদপুর-৩: ডা. দীপু মনি, পিরোজপুর-১: অ্যাডভোকেট শ ম রেজাউল করিম, পটুয়াখালী-১: অ্যাডভোকেট শাহজাহান মিয়া, টাঙ্গাইল-৮: অ্যাডভোকেট জোয়াহেরুল ইসলাম ভিপি জোয়াহের, বরগুনা-১: অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪: অ্যাডভোকেট আনিসুল হক, ময়মনসিংহ-৬: অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন, হবিগঞ্জ-২: অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান, হবিগঞ্জ-৩: অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির, হবিগঞ্জ-৪: অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী, চট্টগ্রাম-৯: ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, গাইবান্ধা-৫: অ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া, কুমিল্লা-৫: অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, পঞ্চগড়-২: অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন, মাগুরা-১: অ্যাডভোকেট সাইফুজ্জামান শিখর, ঢাকা-২: অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, ঢাকা-১০: শেখ ফজলে নূর তাপস, ঢাকা-১৮: অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, মুন্সিগঞ্জ-৩: মৃণাল কান্তি দাস, রংপুর-৬: শিরীন শারমিন চৌধুরী এবং গাজীপুর-১: অ্যাডভোকেট আ. ক. ম. মোজাম্মেল হক।
জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত আইনজীবী সংসদ সদস্যরা হলেন– বগুড়া-৩: অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম তালুকদার, কিশোরগঞ্জ-৩: অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক চুন্নু, চট্টগ্রাম-৫: ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, গাইবান্ধা-১: ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এবং সুনামগঞ্জ-৪: অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান।
উল্লেখ্য, ১০ বছর পর অংশগ্রহণমূলক এই নির্বাচনে গতকাল ২৯৯টি আসনে ভোট হয়। একজন প্রার্থী মারা যাওয়ায় গাইবান্ধা-৩ আসনে আগেই ভোট গ্রহণ স্থগিত করা হয়। সেখানে পরে ভোট নেওয়া হবে। এছাড়া অনিয়ম ও গোলযোগের কারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনের তিন কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রয়েছে। ফলে নির্বাচনে ২৯৯ আসনের মধ্যে ২৯৮টির বেসরকারি ফল ঘোষণা করা হয়েছে।