ক্যালিফোর্নিয়ার সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হয়েছেন হালিম ধানিদিনা। সম্প্রতি সর্বোচ্চ আদালতের আপিল বিভাগের উচ্চ পদে তিনি এ পদোন্নতি লাভ করেন। আর এতে করে তিনি অঙ্গরাজ্যটির প্রথম এবং সবচেয়ে সিনিয়র মুসলিম বিচারক হিসেবে আবির্ভূত হন। খবর আমেরিকান সংবাদমাধ্যম পিবিএস নিউজের।
স্থানীয় জনগণের কাছে তার এ নিয়োগপ্রাপ্তি ক্যালিফোর্নিয়ার ঐতিহাসিক ঘটনা হিসাবে বিবেচিত হচ্ছে। আমেরিকাজুড়ে ইসলামফোবিয়ার দুঃসহ এ সময়ে হালিম ধানিদিনার এমন সাফল্য আমেরিকান মুসলিমদের মনে বেশ আশা ও উৎসাহ সঞ্চার করেছে।
হালিমের জন্ম আমেরিকার শিকাগোতে। তবে তার মা-বা দুইজনই ভারতীয়। বিয়ের পর তারা ভারতের গুজরাট থেকে প্রথমে পূর্ব আফ্রিকায় স্থনান্তরিত হন। এরপর সেখান থেকে গিয়ে আমেরিকায় স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ধানিদিনা বলেন, ‘ক্যালিফোর্নিয়ার সুপ্রিম কোর্টে প্রথম মুসলিম হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার বিষয়ে আমি খুব বেশি চিন্তা করিনি এবং তা আশা কিংবা কল্পনাও করিনি।’
তার কৃতিত্বপূর্ণ পদোন্নতি ও নিয়োগের কারণে ক্যালিফোর্নিয়ার স্থানীয় মুসলমানরা বেশ খুশি হয়েছে। তার মাধ্যমে ক্যালিফোর্নিয়ান মুসলমানদের সঙ্গে লস এঞ্জেলেসের ইহুদিদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় সুন্দর পরিবেশ তৈরী হবে বলে তাদের বিশ্বাস।
মার্কিন আদালতের একমাত্র মুসলিম বিচারক হিসাবে কাজ করতে গিয়ে ধানিদিনাকে বৈষম্যমূলক ও লাঞ্ছনাকর বিভিন্ন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে। ইসলামফোবিয়া ও ভিনদেশি হওয়ায় দেশীয় বিভিন্ন নিয়ম-নীতি মোকাবেলা করে আসতে হয়েছে। অনেকে তার গণতান্ত্রিক ভূমিকা নিয়ে সন্দেহও পোষণ করেছিল। কিন্তু হালিম অকাট্যভাবে বলে দিয়েছেন, ‘আমি বিব্রতকর ও পরিণামদর্শী মন্তব্যগুলো মোকাবেলা করা রপ্ত করে নিয়েছি। আর আমি এও বুঝতে শুরু করেছি যে, আমার মতো কোনো মুসলিম বিচারক না হলে, তাকে এত ধরনের ভীতিপূর্ণ মন্তব্যের মুখোমুখি হতে হতো না।’
বিচারক অ্যান্ড্রু কিম তার সহকর্মী ধানিদিনা সম্পর্কে বলেন, ‘বিচারব্যবস্থা বিষয়ে যখন আমি তার সঙ্গে কথা বলেছি, তখন স্পষ্টভাবে বুঝতে পেরেছি যে অভিজ্ঞতা-দক্ষতা এবং জুরির সঙ্গে মজবুত সম্পর্ক বজিয়ে রাখার কারণে হালিমের জন্য অপূর্ব-সুন্দর ও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।’
তার অন্যান্য সহকর্মীরা দৃঢ়তার সঙ্গে আশা করেছেন যে, তিনি রাষ্ট্রের বিভিন্ন ধরনের অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে বিচারমন্ত্রণালয়ে অনুসরণীয় নিয়ম-পদ্ধতি ও দৃষ্টান্ত স্থাপন করবেন।
বিচারবোর্ডের সভাপতি আন্দ্রেস রাসেল ধানিদিনা সম্পর্কে বলেন, ‘গত চার বছর ধরে তাকে আমি চিনি। আমেরিকায় সে খুব কঠিন সময় পার করে এসেছে। অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রতি তার শ্রদ্ধাবোধ ও আন্তরিকতা অভূতপূর্ব। আমার বিশ্বাস আমরা একসঙ্গে চমৎকার ও সুচারুভাবে কাজ করতে পারবো।