সৌদি আরবে নতুন একটি আইন জারি করা হয়েছে, যার ফলে দেশটির নারীরা খুদে বার্তার মাধ্যমে তাদের বিচ্ছেদ কার্যকর হওয়ার তথ্য জানতে পারবেন। কারো বিচ্ছেদের আবেদন অনুমোদন হলে আদালত এসএমএস পাঠিয়ে নারীদের নিশ্চিত করবে।
আজ রোববার (৬ জানুয়ারি) থেকে নতুন আইনটি কার্যকর হয়েছে।
স্থানীয় নারী আইনজীবীরা বলছেন, এর ফলে দেশটিতে নারীদের ক্ষেত্রে হঠাৎ করে বিচ্ছেদের প্রবণতা বন্ধ হবে, যা দেশটিতে ‘গোপন তালাক’ নামে পরিচিত। যার ফলে স্ত্রীদের কোন কিছু না জানিয়েই বিয়ে ভেঙ্গে দিতে পারতেন স্বামীরা।
ফলে নতুন এই নির্দেশনায় নারীরা তাদের বৈবাহিক অবস্থা সম্পর্কে পুরোপুরি জানতে পারবেন এবং বিয়ের পরবর্তী খোরপোশের অধিকার রক্ষা করতে পারবেন।
দেশটির নারীদের ওপর গাড়ি চালনায় কয়েক দশকের নিষেধাজ্ঞার পর গত বছর থেকে সেটি তুলে নেয়া হয়।
তবে এখনো দেশটির নারীদের পুরুষ অভিভাবকদের তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়।
সৌদি আইনজীবী নাসরিন আল-গামদি ব্লুমবার্গ ম্যাগাজিনকে বলেছেন, ” নতুন এই পদক্ষেপে বিচ্ছেদের পরে নারীরা তাদের অধিকার রক্ষা করতে পারবেন। পাশাপাশি বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপব্যবহারও রোধ হবে।”
সৌদি আরবের অনেক নারী দেশটির আদালতে আপিল করেছেন যে, তাদেরকে কোন রকম অবহিত না করেই ‘তালাক’ দিয়েছেন তাদের স্বামীরা, বলছেন আইনজীবী সামিয়া আল-হিনদি।
বলা হচ্ছে, সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সংস্কার কর্মসূচীর অংশ হিসাবে নতুন এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে, যিনি এর আগে সেদেশে নারীদের মাঠে গিয়ে ফুটবল ম্যাচ দেখার সুযোগ এবং পুরুষদের জন্য সংরক্ষিত চাকরিতে নারীদের চাকরির সুযোগ তৈরি করে দেন।
সৌদি আরবে এখনো নারীরা কোন কাজগুলো করতে পারেন না?
একজন পুরুষ অভিভাবকের সম্মতি ছাড়া সৌদি আরবের নারীরা এখনো অনেক কাজ করতে পারেন না। এই অভিভাবকদের মধ্যে রয়েছে স্বামী, বাবা, ভাই অথবা ছেলে।
এসবের মধ্যে রয়েছে:
- পাসপোর্টের জন্য আবেদন
- বিদেশ ভ্রমণ
- বিয়ে করা
- ব্যাংকের হিসাব খোলা
- কিছু ব্যবসা শুরু করা
- অস্ত্রোপচার করা
- কারাগার থেকে বের হওয়া
এই পদ্ধতির ফলে মধ্যপ্রাচ্যের যে দেশগুলোয় পুরুষদের তুলনায় নারীরা বৈষম্যের শিকার হন – তাদের মধ্যে সৌদি আরবের নারীরাও রয়েছেন। সূত্র : বিবিসি বাংলা