ফেনীতে চার তরুণীকে ৬ মাস ধরে একটি বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ ও নির্যাতনের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার প্রধান আসামি কাশেম বিন কাওসারকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ফেনী মডেল থানা পুলিশের একটি দল শনিবার (১২ জানুয়ারি) বিকেলে তাকে ফেনী সদরের রামপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করে।
ফেনী আদালত পুলিশের উপ-পরিদর্শক (জিআরও) মোহাম্মদ উল্যাহ জানান, আলোচিত এ মামলার আসামি কাশেম বিন কাওসারকে শনিবার বিকেলে ফেনী সদর আদালতের বিচারক ও জ্যেষ্ঠ বিচার বিভাগীয় হাকিম মো. জাকির হোসেনের আদালতে নিয়ে আসে পুলিশ। এদিন পুলিশের পক্ষ থেকে তার জন্য ৫ দিনের রিমান্ড চাওয়া হলেও আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ থাকায় রিমান্ড শুনানি হয়নি।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক মো. শাহজাহান বলেন, মামলাটির প্রধান আসামি কাশেম বিন কাওসারকে আদালতে নেয়া হলে বিচারক তাকে জেলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আজ রোববার (১৩ জানুয়ারি) একই আদালতে তার রিমান্ড শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
পুলিশ জানায়, মামলার প্রধান আসামি কাশেম বিন কাওসারকে গ্রেফতার করতে গত কয়েকদিন ধরে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালায় পুলিশ। গোপনে পাওয়া খবরের ভিত্তিতে শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তাকে ফেনীর রামপুর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এর আগে একই মামলার অন্যতম আসামি মো. ওমায়ের, অয়ন প্রকাশ ছোটন ও আরিফুল ইসলাম আরমানকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
প্রসঙ্গত, ফেনী শহরের রামপুরের এক বাসায় চার নারীকে আটকে রেখে একটি চক্র ৬ মাস ধরে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে বাধ্য করে এবং কয়েক যুবক তাদের ধর্ষণ করে। গত ৭ জানুয়ারি সোমবার সকালে ওই বাসার ভেতরে তরুণীদের কান্না ও চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযান চালায়। এ সময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে বাসার মালিকসহ নির্যাতনকারীরা পালিয়ে যায়। পরে ওই বাসার দরজার তালা ভেঙ্গে শারীরিক ভাবে হতাশাগ্রস্থ অবস্থায় চার তরুণীকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এসময় নির্যাতনের বিভিন্ন সামগ্রী, খেলনা পিস্তল, ৫৩ পিস ইয়াবা বড়িসহ মাদক সেবনের বিভিন্ন সরঞ্জাম ও নির্যাতনের আলামত জব্দ করা হয়েছে। ওই নারীদের মধ্যে একজন গত বৃহস্পতিবার বাদী হয়ে ফেনী মডেল থানায় মামলা করলে পুলিশ প্রধান আসামি কাওসারসহ চারজনকে গ্রেফতার করে। এছাড়া মাদক উদ্ধারের ঘটনায়ও থানায় পৃথক মামলা হয়েছে। ফেনী ২৫০ শয্যা জেলা সদর হাসপাতালে তরুণীদের শারীরিক পরীক্ষা শেষে ফেনীর বিচারিক হাকিমের আদালতে হাজির করে ২২ ধারায় জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়।