বইপড়ার আগ্রহ দিন দিন হারিয়ে ফেলার কারণেই আজকের যুব সমাজ নানা অপরাধ জগতে জড়িয়ে যাচ্ছে। ব্যক্তি ও পরিবারকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে, সমাজকে উন্নত করতে বই ও পাঠাগারকে গুরুত্ব দিতে হবে।
আজ সোমবার (১৪ জানুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সপ্তাহব্যাপী বইমেলা উদ্বোধন উপলক্ষে আয়োজিত সভায় একথা বলেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, শুধু পাঠ্যসূচির কয়েকটি বই পড়ে প্রাতিষ্ঠানিক ডিগ্রিতেই জ্ঞানের পূর্ণতা অর্জন করা যায় না। এজন্য বহুমুখী প্রতিভা অর্জন ও বিচিত্র জ্ঞানের জন্য নানা ধরনের বই পড়তে হয়। জ্ঞানার্জনের নির্দিষ্ট বই ও নির্ধারিত কোনো সময়সীমা নেই। বিখ্যাত ফার্সি কবি শেখ সাদী এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘সমস্ত জীবন জ্ঞানের ওপর লেখা-পড়া করে বুঝেছি যে, জ্ঞানের বাতাস গায়ে লেগেছে মাত্র। প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করতে পারিনি।’
‘জ্ঞানরাজ্যের তৃপ্তি মেটানোর জন্য বইয়ের বিকল্প নেই। বই আত্মার খোরাক জোগায়। অন্ধকার যেমন আলো ছাড়া দূরীভূত করা যায় না, তেমনি বই ছাড়া কেউ জ্ঞানী হতে পারে না।’
প্রধান বিচারপতি আরও বলেন, আমাদের সুশীল সমাজের অংশ হিসেবে বিচারক ও আইনজীবীদের মনে রাখতে হবে- ধৈর্য, তিতিক্ষা ও সাধনা ছাড়া জ্ঞানের দীপশিখা জ্বলবে না। আইন শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিল্প, কাব্য, দর্শন ও সংস্কৃতি বিষয়ক জ্ঞান অর্জনে ব্রতী হতে হবে। তথ্য-প্রযুক্তিরও সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। কারণ গৌরবের শীর্ষ শিখরে পৌঁছানোর জন্য বইপড়ার বিকল্প নেই।
‘আমাদের সমাজে অনেক শিক্ষিতই এখন বই কেনেন না। আবার সংগ্রহে থাকার পরও পড়েন না। বইপড়ার আগ্রহ দিন দিন হারিয়ে ফেলার কারণেই আজকের যুবসমাজ নানা অপরাধ জগতে জড়িয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘একটা সভ্যতাকে ধ্বংস করতে মহা কোনো পরিকল্পনার প্রয়োজন নেই। ওই সভ্যতার সবগুলো বইও পুড়িয়ে ফেলার কোনো দরকার নেই। শুধু মানুষকে বইপড়া থেকে বিরত রাখতে পারলেই তা হয়ে যাবে।
অনুষ্ঠানে সমিতির সভাপতি জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি, সমিতির সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন উপস্থিত ছিলেন।