সমাজের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী তৃতীয় লিঙ্গের সদস্যরা এবারই প্রথম ভোটাধিকার পেয়েছেন। তবে তাদের কেউ এখনো জনপ্রতিনিধি হওয়ার যোগ্যতা লাভ করেননি। ভোটাধিকার পাওয়ার পর তাদের কেউ কেউ স্বপ্ন দেখেছিলেন নিজেদের অধিকার ও সমস্যার কথা তুলে ধরতে সংসদে প্রতিনিধি হয়ে যাওয়ারও। কিন্তু আইনের গ্যাঁড়াকলে সে স্বপ্ন পূরণ হচ্ছে না তাদের।
গত ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে সরকার গঠনের পর সংরক্ষিত আসনে দলটি থেকে নির্বাচিত হতে তৃতীয় লিঙ্গের ৮ জন মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছিলেন। ফরম সংগ্রহকালে তাদের অনেকেই বলেছিলেন, সংসদে হিজড়াদের কোনো প্রতিনিধি নেই। তাই তাদের বিষয়গুলো সঠিকভাবে উঠে আসে না। সেজন্য এবার হিজড়ারা সংসদে প্রতিনিধি দেখতে চাইছেন।
কিন্তু সংবিধান অনুযায়ী, সংরক্ষিত আসনে তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে নির্বাচিত করার সুযোগ নেই। সংবিধানের এ সংক্রান্ত সর্বশেষ সংশোধনীর ৬৫ (১)-এর ৩ অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘সংসদে ৫০টি আসন কেবল মহিলা-সদস্যদের জন্য সংরক্ষিত থাকিবে।’ এমনকি গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশেও (আরপিও) তৃতীয় লিঙ্গের বিষয়ে কিছু উল্লেখ নেই।
সেজন্য সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সংবিধানে সংশোধনী না এনে তৃতীয় লিঙ্গের কাউকে জাতীয় সংসদের সংরক্ষিত আসনের সদস্য করা সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে সংসদ সচিবালয়ের আইন শাখার একজন সিনিয়র সচিব নাম প্রকাশ না করা শর্তে গণমাধ্যমকে বলেন, সংরক্ষিত আসন শুধু নারীদের জন্য, হিজড়াদের নারী হিসেবে স্বীকৃতি নেই বিধায় তাদের সংরক্ষিত আসনে সদস্য হওয়ার সুযোগ নেই। তাদের প্রতিনিধিত্ব করতে হলে সংবিধানে সংশোধনী আনতে হবে। অন্যথায় তারা সুযোগ পাবেন না।
আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি একাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত ৫০টি নারী আসনে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন।