বিএনপিপন্থী আইনজীবীদের সংগঠন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর দলের হাজার হাজার নেতাকর্মীদের মামলার বিষয়ে আইনি সহায়তা দিতে দলটির হাইকমান্ড এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিএনপির নীতিনির্ধারকদের বৈঠকের আগে বৃহস্পতিবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে গুলশান কার্যালয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে বৈঠক করেন দলটির সিনিয়র নেতারা। এতে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামকে পুনর্গঠন করা নিয়ে আলোচনা হয়। তবে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া হয়নি। আগামী ৩১ জানুয়ারি আবারও বৈঠক আহ্বান করা হয়েছে। সেই বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের বর্তমান সভাপতি দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যরিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া। আর সম্পাদক পদে আছেন দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যরিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন।
ব্যারিস্টার রফিক বয়সের ভারে ন্যুব্জ। তিনি স্থায়ী কমিটির বৈঠকেই নিয়মিত থাকেন না। আর ব্যরিস্টার খোকন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। তাকে দলের কাজ এবং খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। সভাপতি ও সম্পাদকের অসুস্থতা ও ব্যস্ততায় ঝিমিয়ে পড়েছে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম। এমতাবস্থায় এটি পুনর্গঠনের তাগিদ অনুভব করছে হাইকমান্ড।
বৈঠক সূত্র জানায়, সারা দেশে মামলা-হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত নেতাকর্মীদের আইনি সহায়তার জন্য আইনজীবী ফোরামকে সক্রিয় করার উদ্যোগ নেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
এজন্য দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার জমিরউদ্দিন সরকারকে তিনি দায়িত্ব দেন। তিনি এ ফোরামের আইনজীবীসহ অন্যদের সঙ্গে শলা-পরামর্শ করে করণীয় কৌশল নির্ধারণ করে হাইকমান্ডকে অবহিত করেন।
এ নিয়েও বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হয়। এর বাইরে বৈঠকে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আইনজীবীদের সঙ্গে নেতারা আলোচনা করেন। তাকে জামিনে মুক্ত করার জন্য নতুন কৌশলে আইনি তৎপরতা শুরু করার জন্য নীতিনির্ধারকরা আইনজীবীদের পরামর্শ দেন।
বৈঠকের বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা ম্যাডামের মামলার বিষয়গুলোকে জোর দিচ্ছি।
তার মুক্তির ব্যাপারটিকেই প্রাধান্য দিচ্ছি। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনি প্রক্রিয়ায় কিভাবে তার জামিন সম্ভব হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, বেগম জিয়ার জামিনের বিষয়টি রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত। এ কারণে তার জামিন হচ্ছে না। আমাদের আলোচনা হয়েছে, আরও আলোচনা হবে। অ্যাডভোকেট মাসুদ আহমেদ তালুকদার বলেন, আগামী ৩১ জানুয়ারি সিলেক্টিভ আইনজীবীদের বর্ধিত সভা হবে। সেখানে আরও বিস্তারিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
বৈঠকে বিএনপি মহাসচিবসহ স্থায়ী কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন আবদুর রেজ্জাক খান, ব্যারিস্টার শাহজাহান ওমর, জয়নুল আবেদিন, আমিনুল হক, নিতাই রায় চৌধুরী, এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল প্রমুখ।