ঘুষের পাঁচ লাখ টাকাসহ দুদকের ফাঁদে ধরা পড়ার মামলায় নৌ অধিদফতরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী ও সার্ভেয়ার ড. এস এম নাজমুল হককে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আজ সোমবার (২৮ জানুয়ারি) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক ড. শেখ গোলাম মাহবুবের আদালতে আত্মসমর্পণ করে আইনজীবীর মাধ্যেমে জামিনের আবেদন করেন নাজমুল। শুনানি শেষে বিচারক তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এর আগে ২৩ জানুয়ারি মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) আমলে নেয়ার জন্য দিন ধার্য ছিল। নাজমুল আদালতে উপস্থিত না হয়ে সময়ের আবেদন দাখিল করেন। আদালত সময়ের আবেদন নামঞ্জুর করে অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন। একইসঙ্গে মামলাটি ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে বদলি করে চার্জ শুনানির জন্য ২ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন।
এর আগে ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ নাজমুলের জামিন বাতিল করেন। একইসঙ্গে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তাকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
২০১৮ সালের ১৩ আগস্ট মেট্রো সিনিয়র স্পেশাল জজ ৫০ হাজার টাকার বন্ডে তাকে জামিন দেন। সেই আদেশের বিরুদ্ধে দুদক ১৬ অক্টোবর রিভিশন আবেদন করলে হাইকোর্ট ২২ অক্টোবর রুল জারি করেন। আজ ওই রিভিশনের ওপর জারি করা রুলের শুনানি শেষে রায় দেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি মেসার্স সৈয়দ শিপিং লাইসেন্সের মালিক জালাল উদ্দিন নৌ অধিদফতরে জমা দেয়া অভ্যন্তরীণ নৌ- চলাচল অধ্যাদেশ (ISO 1976) এর ৫(ক) অনুযায়ী নকশা জমা হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংশোধনীসহ অনুমোদন দিতে হবে। কিন্তু নৌ অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী ও সার্ভেয়ার ড. এস এম নাজমুল হক উক্ত নৌ যানের নকশা অনুমোদনের জন্য এবং নতুন নৌযানের নামকরণের অনাপত্তি দিতে মেসার্স সৈয়দ শিপিং লাইন কর্তৃপক্ষের কাছে ১৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন।
শিপিং লাইন কর্তৃপক্ষ বাধ্য হয়ে দাবি করা ১৫ লাখ টাকার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা অগ্রিম দেন। বাকি টাকার জন্য চাপাচাপি করলে মালিক পক্ষ বিষয়টি দুদককে জানায়। দুদক ফাঁদ তৈরি করে ঘুষের পাঁচ লাখ টাকাসহ ১২ এপ্রিল হাতেনাতে তাকে গ্রেফতার করে। পরে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ শাহবাগ থানার মামলা করেন। গত বছরের ১৮ অক্টোবর দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ তার বিরুদ্ধে আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।