ভেনেজুয়েলা স্বঘোষিত অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হুয়ান গুইদোর বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দের নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সুপ্রিম কোর্ট। একইসঙ্গে গুইদোর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্তের অনুমতি দিয়েছে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।
এমন কোনো কিছু করা হলে ‘গুরুতর পরিণতি হবে’ বলে যুক্তরাষ্ট্র সতর্ক করার পরও মঙ্গলবার এসব পদক্ষেপ নেয় ভেনেজুয়েলার কর্তৃপক্ষগুলো, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
সরকারি কৌঁসুলিরা গুইদোর বিষয়ে তদন্ত করতে পারবে বলেও জানিয়েছে সর্বোচ্চ আদালত।
সোমবার ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রায়ত্ত তেল কোম্পানি পিডিভিএসএ-র ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যুক্তরাষ্ট্র।
এই নিষেধাজ্ঞার কারণে পিডিভিএসএ উত্তর আমেরিকার ক্রেতাদের সঙ্গে করা চুক্তি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করতে পারবে না বলে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোর সরকার জানিয়েছে।
মাদুরোকে ক্ষমতা থেকে সরাতে ৫৬ বছর বয়সী এই শ্রমিক নেতার বিরুদ্ধে নেওয়া সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ এ নিষেধাজ্ঞা। এ পদক্ষেপের পর বিশ্বব্যাপী তেলের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে চীন ও রাশিয়া।
এরপরই গত সপ্তাহে নিজেকে ‘অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে ঘোষণা করার পর প্রথমবারের মতো গুইদোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিল ভেনেজুয়েলা সরকার। গত সপ্তাহে তিনি প্রেসিডেন্ট মাদুরোর কর্তৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করে ওই ঘোষণা দিয়েছিলেন।
ভেনেজুয়েলার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে বিদেশি রাষ্ট্রগুলোকে হস্তক্ষেপ করতে সাহায্য করেছেন গুইদো, এ অভিযোগে গুইদোর বিরুদ্ধে তদন্তের অনুমতি দিতে সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল তারেক সাব। একজন আইনপ্রণেতা ও জাতীয় পরিষদের প্রধান হিসেবে বিশেষ ছাড় থাকায় সর্বোচ্চ আদালতের অনুমতি ছাড়া গুইদোর বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত করা যায় না।
আবেদন অনুমোদন করে সুপ্রিম কোর্ট গুইদোর বিরুদ্ধে প্রাথমকি তদন্তের অনুমতি দেয়।
এর পাশাপাশি ৩৫ বছর বয়সী বিরোধীদলীয় নেতা গুইদোর বিরুদ্ধে ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট জব্দেরও নির্দেশ দেয় সুপ্রিম কোর্ট।
ভেনেজুয়েলার ৩২ সদস্যের সুপ্রিম কোর্ট দ্রুততার সঙ্গে গুইদোর বিরুদ্ধে তদন্তের আবেদনে সায় দিয়েছে; ‘মাদুরোর প্রতি শীর্ষ আদালতের আনুগত্যের’ কারণেই এমনটি হয়েছে বলে মন্তব্য রয়টার্সের।
যুক্তরাষ্ট্র ও এর মিত্র দেশগুলো গুইদোকে ভেনেজুয়েলার বৈধ রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে এবং মাদুরোকে ‘ক্ষমতা দখলকারী’ আখ্যা দিয়ে তার নিন্দা করেছে। অপরদিকে চীন, রাশিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ খোলাখুলি মাদুরোর প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।