নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ না পাওয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন আইনজীবীরা। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের অস্থায়ী ভবনের সামনে গত ৬ এপ্রিল মানববন্ধন করেন নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সদস্য পদ বঞ্চিত ২৫ জন আইনজীবী।
জানা গেছে, গত ২৩ ডিসেম্বর প্রকাশিত ফলাফলে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশন থেকে ১৬১ জন প্রার্থী আইনজীবী হিসাবে তালিকাভূক্ত হয় এবং চলতি বছরের ২৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ বার কাউন্সিল কর্তৃক এক নোটিশের মাধ্যমে ১৬১ জন তালিকাভূক্ত আইনজীবীকে নারায়ণগঞ্জ এসোসিয়েশনে সদস্য পদ গ্রহণ করতে বলা হয়। এ প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশন অফেরত যোগ্য ৫,০০০/= (পাঁচ হাজার) টাকা মূল্যের আইনজীবী সদস্য ফরম বিক্রি করে এবং ১৬১ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৫৯ জন প্রার্থী ফরম ক্রয় করে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনে জমা দেন। এরপর নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশন এক নোটিশের প্রেক্ষিতে বিগত ২৫, ২৬ ও ২৭ ফেব্রুয়ারি মোট ০৩ দিনে ১৫৯ জন প্রার্থী উপস্থিত সাক্ষাৎকার এবং ভাইভা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। উক্ত উপস্থিত সাক্ষাৎকার এবং ভাইভা পরীক্ষার আলোকে গত ১৪ মার্চ এক নোটিশের মাধ্যমে ১৫৯ জন প্রার্থীর মধ্যে ১৩৪ জন প্রার্থীকে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনে প্রয়োজনীয় ফি দিয়ে সদস্য পদ গ্রহণ করতে বলা হয়। অবশিষ্ট ২৫ জন প্রার্থীর ফলাফল প্রকাশ করা হয় নাই।
পরে উক্ত ২৫ জন প্রার্থীর মধ্যে কয়েক জন্য প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সভাপতির সাথে যোগাযোগ করে কেন তাদের নাম প্রকাশিত হয় নাই জানতে চাইলে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মোঃ হাসান ফেরদৌস উক্ত প্রার্থীদের বলেন, আপনারা বারের এনরোলমেন্ট কমিটি কর্তৃক গৃহীত ভাইভা পরীক্ষায় ফেল করেছেন। আপনারা এনরোলমেন্ট কমিটির সাথে যোগাযোগ করেন, এখানে আমার কিছুই করার নাই।
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ মুহাসিন মিয়ার শরণাপন্ন হলে তিনি সদস্য পদ বঞ্চিত আইনজীবীদের বলেন, ভাইভা এনরোলমেন্ট কমিটি যে প্রার্থীদের নামের তালিকা প্রকাশের জন্য সুপারিশ করেছেন আমি শুধু তা নোটিশ আকারে প্রকাশ করেছি। এ বিষয়ে আমার কিছু করার নাই। আপনার ভাইভা এনরোলমেন্ট কমিটির সাথে যোগাযোগ করেন।
নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশন এর পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট এস.এম ওয়াজেদ আলী খোকনের সাথে কয়েক জন্য প্রার্থী যোগাযোগ করলে তিনি তাদের বলেন, ভাইভা এনরোলমেন্ট কমিটিতে আমরাতো সবাইকে সদস্য হিসাবে নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছি।
এছাড়া নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের সিনিয়র আইনজীবী এবং ভাইভা বোর্ডের প্রধান অ্যাডভোকেট এম.এ রশীদ ভূইয়ার সাথে যোগাযোগ করলে তিনি সদস্য পদ বঞ্চিতদের বলেন, ভাইভা এনরোলমেন্ট কমিটিতে আমরাতো সবাইকে সদস্য হিসাবে নেওয়ার জন্য সুপারিশ করেছি কিন্তু কেন আপনাদের নাম প্রকাশিত হয় নাই তা আমার জানা নাই। আপনারা বরং বারের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করেন।
নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশনের বর্তমান কমিটির একাধিক সদস্যেও সাথে কয়েক জন্য প্রার্থী যোগাযোগ করলে তারাও বারের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদকের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন।
পরবর্তীতে ভাইভা পরীক্ষার প্রকাশিত নামের তালিকা না আসা কিছু প্রার্থী নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক বরাবর সদস্য তালিকাভূক্তির জন্য পুনঃবিবেচনার আবেদন করেন এবং তাতে নারায়ণগঞ্জ বার এসোসিয়েশন সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক কোন কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় বিগত ২৮ মার্চ বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সচিব বরাবর সদস্য পদ বঞ্চিত ২৫ জন তালিকাভূক্ত আইনজীবী নারায়ণগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতিতে সদস্য হিসাবে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন করেন। এরপর গত ৬ এপ্রিল একই দাবীতে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল বর্তমান প্রধান কার্যালয় – রূপায়ণ টাওয়ার, বাংলামোটর, ঢাকাতে উক্ত আইনজীবীদের সংশ্লিষ্ট আইনজীবী সমিতির সদস্য পদ হিসেবে গ্রহণের জন্য মানববন্ধন করেন।