‘ভুল আসামি’হয়ে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের ডুমুরিয়া গ্রামের জাহালম জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর কেমন আছেন এবং কীভাবে জীবন-যাপন করছেন সে বিষয়ে জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।
জাহালমের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার নথি তলবের বিষয়ে শুনানি নিয়ে আজ বুধবার (১০ এপ্রিল) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে জাহালমের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। অন্যদিকে দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।
আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেন জাহালমের আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। তিনি জানান, জাহালমের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে তাকে আগামী বুধবার (১৭ এপ্রিল) আবারও আদালত হাজির হতে বলেছেন আদালত।
উল্লেখ্য, ২৬ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে থাকার অভিযোগের বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি ও মামলার বাদীসহ চারজনকে গত ২৮ জানুয়ারি তলব করেছিলেন হাইকোর্ট। দুদক চেয়ারম্যানের প্রতিনিধি, মামলার বাদী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সচিবের একজন প্রতিনিধি ও আইন মন্ত্রণালয় সচিবের একজন প্রতিনিধিকে উপস্থিত থেকে এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়।
একটি জাতীয় দৈনিকে ‘৩৩ মামলায় ‘ভুল’ আসামি জেলে ‘স্যার, আমি জাহালম, সালেক না’ শীর্ষক একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত।
ওই প্রতিবেদনটি আদালতে উপস্থাপনের পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশে দেন হাইকোর্ট।
পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আবু সালেক নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির অভিযোগে ৩৩টি মামলা হয়েছে। কিন্তু আবু সালেকের বদলে জেল খাটছেন, আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছেন জাহালম। তিনি পেশায় পাটকলশ্রমিক।
জাহালমের কারাবাসের তিন বছর পূর্ণ হবে আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি। দুদক বলছে, জাহালম নিরপরাধ প্রমাণিত হয়েছেন। তদন্ত করে একই মত দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনও। ফলে একটি মামলায় তার জামিন হয়েছে। আরও ৩২টি মামলায় জামিন পাওয়ার অপেক্ষায় আছেন তিনি।
তবে এরই মধ্যে জাহালমকে ২৬ মামলায় জামিন দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি গত ৬ মার্চ জাহালমের বিরুদ্ধে দুদকের হওয়া সব মামলার প্রাথমিক তথ্য বিবরণী (এফআইআর), অভিযোগপত্রসহ (সিএস) যাবতীয় নথি দাখিল করতে আদেশ দিয়েছিলেন। যার ধারাবাহিকতায় বুধবার (১০ এপ্রিল) মামলাটি শুনানির জন্য উঠলে আদালত জাহালমের খোঁজ-খবর জানতে চেয়েছেন।