ফেনীর সোনাগাজীতে আগুনে পুড়িয়ে মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফি হত্যার ঘটনায় আরও এক তরুণকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
সোনাগাজী পৌরসভার তুলাতলী থেকে গতকাল সোমবার (১৫ এপ্রিল) রাতে ওই তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার তরুণের নাম মো. শামীম (১৯)। তিনি সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার আলিম পরীক্ষার্থী।
পিবিআইয়ের পরিদর্শক শাহ আলম গণমাধ্যমকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
শাহ আলম জানান, গত রোববার মামলার অন্যতম দুই আসামি শাহাদাত হোসেন ওরফে শামীম ও নুর উদ্দিন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। তাঁদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল অভিযান চালিয়ে মো. শামীমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পিবিআই পরিদর্শক বলেন, নুসরাতের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার সময় শামীম প্রশাসনিক ভবনের নিচতলায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণের দায়িত্বে ছিলেন।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় এই মামলায় আটজনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও চার-পাঁচজনকে আসামি করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলাসহ ১৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এর মধ্যে এজাহারভুক্ত সাতজন আসামি রয়েছেন।
নুসরাত হত্যার ঘটনায় সরাসরি অংশ নেওয়া আরেক নারী কামরুন্নাহার ওরফে মণিকে গ্রেপ্তারের কথা শোনা গেলেও তদন্ত কর্মকর্তা পরিদর্শক মো. শাহ আলম সেটাকে গুজব বলে উড়িয়ে দেন। হত্যাকাণ্ডে সরাসরি অংশ নেওয়া পাঁচজনের মধ্যে চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে তিনি জানান।
নুসরাত হত্যায় জড়িত অধ্যক্ষ সিরাজসহ অন্য আসামিদের ফাঁসি ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে গতকাল রাতে সোনাগাজী পৌরশহরের উপজেলা ছাত্রলীগের আয়োজনে মোমবাতি প্রজ্বালন করে প্রতিবাদ জানানো হয়। এ সময় সর্বস্তরের মানুষ মোমবাতি প্রজ্বালন কর্মসূচিতে অংশ নেন।
উল্লেখ্য, ৬ এপ্রিল ফেনীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে দুর্বৃত্তরা তাঁর গায়ে আগুন লাগিয়ে দেয়। গুরুতর দগ্ধ নুসরাতকে ওই দিন রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে নুসরাত মারা যান।
এর আগে গত ২৭ মার্চ ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদদৌলার বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা।