ভিকারুননিসা নূন স্কুলের ছাত্রী অরিত্রির আত্মহত্যার ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন আগামী ১২ ম ‘র মধ্যে জমা দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে, শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয়-সংক্রান্ত জাতীয় নীতিমালা করতে মনোবিজ্ঞানী নিয়োগ বা তাদের মতামত নেয়ার বিষয়ে কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে আদালতে তাও জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রোববার (২৮ এপ্রিল) এই আদেশ দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার)। আবেদনের পক্ষে ছিলেন, ব্যারিস্টার অনীক আর হক, জ্যোতির্ময় বড়ুয়া, আইনুন্নাহার সিদ্দিকা, জেসমিন সুলতানা।
আদেশের বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার)। তিনি জানান, আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয়-সংক্রান্ত নির্দেশনার পর কি কি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এ বিষয়ে প্রতিবেদন জমা দেয়ার নির্ধারিত দিনে (রোববার) আদালত এ আদেশ দেন।
ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার) জানান, আশা করি আগামী ১২ মে’র পরবর্তী তারিখে এ বিষয়ে অগ্রগতি প্রতিবেদন জমা দিতে পারব। জাতীয় শিক্ষানীতিতে স্টুডেন্টদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে কাউন্সিলিং করার জন্য মনোবিজ্ঞানী বা অন্যান্যদের সমন্বয়ে নীতিমালা তৈরির অগ্রগতি কতটুকু সে বিষয়ে জানানো হবে নির্ধারিত তারিখে।
এর আগে, শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে জাতীয় নীতিমালা করতে অতিরিক্ত শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে আদেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। যে কমিটি আত্মহত্যা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয়-সংক্রান্ত জন্য কিছু সুপারিশ করবে।
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল ও কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার ঘটনা আদালতে নজরে আনার পর ব্যাপক উত্তেজনার মধ্যে হাইকোর্ট এই কমিটি গঠন করে এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন।
পাশাপাশি অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধান করে তার প্রতিবেদনও ওই এক মাস সময়ের মধ্যে দিতে বলা হয় কমিটিকে। পাঁচ সদস্যের কমিটিতে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিবের নিচে নয়, এমন একজন প্রতিনিধি, শিক্ষাবিদ, মনোবিদ ও আইনবিদকে রাখতে বলা হয়েছে।
এর আগে, বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে অরিত্রির আত্মহত্যার প্রকাশিত খবর সুপ্রিম কোর্টের চার আইনজীবী নজরে আনার পর ২০১৮ সালের (৪ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ স্বপ্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন।
ওই সময় আদালতের আদেশের পর ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, ‘এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে অতিরিক্ত শিক্ষা সচিবের নেতৃত্বে একটি পাঁচ সদস্যের কমিটি গঠন করে দিয়েছেন আদালত। এক মাসের মধ্যে এই কমিটিকে দুটি প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। একটি হচ্ছে, জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নে তারা একটি প্রতিবেদন দেবে। আরেকটি হচ্ছে, অরিত্রি অধিকারীর আত্মহত্যার কারণ অনুসন্ধানের প্রতিবেদন।
আদালত অন্তবর্তীকালীন নির্দেশনার পাশাপাশি রুলও জারি করেন। অরিত্রির আত্মহত্যার মতো ঘটনা প্রতিরোধের উপায় নির্ণয় করে একটি জাতীয় নীতিমালা প্রণয়নের পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছিল বলেও জানান এই আইনজীবী।