পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় পাহাড় কেটে বা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের আশপাশে ইটভাটা তৈরির বন্ধে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্টদেরকে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
একইসঙ্গে পরিবেশের বিপর্যয় রোধে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম কলাউজান বাংলাবাজারের দক্ষিণে মালিপাড়া ও বাহাদুর পাড়া এলাকায় ফসলি জমিতে পাহাড় কেটে ইটভাটা নির্মাণের কার্যক্রম বন্ধে করা রিটকারীর আবেদন নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যে পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, চট্টগ্রাম জেলার (ডিসি), পরিবেশ অধিদফতরের চট্টগ্রামের প্রধান ও সংশ্লিষ্ট থানার নির্বাহী কর্মকর্তাকে রিটকারীর আবেদন নিষ্পত্তি করার জন্য বলেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৪ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অমিত দাশ গুপ্ত। তার সঙ্গের ছিলেন আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
পরে রিটকারী আইনজীবী রাশিদা চৌধুরী নিলু জানান, চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার পশ্চিম কলাউজান বাংলাবাজারের দক্ষিণে মালিপাড়া ও বাহাদুর পাড়া এলাকায় ফসলি জমিতে পাহাড় কেটে ইটভাটার নির্মাণের কার্যক্রম চলছে। পাশেই রয়েছে কয়েকটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ হাজারও মানুষের বসতি।
ইটভাটা বন্ধের দাবিতে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন মহলে এলাকার জনসাধারণ গণস্বাক্ষর করে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। এ ছাড়াও স্থানীয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ ও পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগ দায়েরকৃত প্রতিষ্ঠানসমূহ হলো পশ্চিম কলাউজান শাহ মজিদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়, খদিজাতুল কুবরা (রা.) মহিলা মাদরাসা, পশ্চিম কলাউজান খতীবিয়া দাখিল মাদরাসা, পশ্চিম কলাউজান শাহ মজিদিয়া হেফজখানা ও এতিমখানা, পশ্চিম কলাউজান শাহ মজিদিয়া শিশু একাডেমি ও কলাউজান খালাছি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এছাড়াও লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাংলা বাজার উন্নয়ন কমিটি।
অভিযোগে জানা যায়, এলাকার মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদের ও জামাল উদ্দীনসহ আরও কয়েকজন প্রভাব খাটিয়ে এলাকার অসহায় কৃষকের জমির ওপর পাহাড় কেটে শ্মশান, লোকালয় ও অভয়ারণ্যের মাঝখানে অবৈধভাবে নতুন ইটভাটা গড়ে তুলছে। ইটভাটার কাজ চালানোর কারণে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীদের চলাচলে চরম বিঘ্ন ঘটছে। কাঁচা রাস্তায় গাড়ি চলাচলের কারণে প্রতি মুহূর্ত ধূলাবালুতে আচ্ছন্ন থাকে পুরো এলাকা।
ইটভাটা বন্ধের ব্যাপারে পরিবেশ অধিদফতর, জেলার ডিসি, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সবার কাছে আবেদন করা হয়। তার পরেও ইটভাটা বন্ধ না করায় রিট করা হয়। ওই রিটের শুনানি নিয়ে আদালত এই আদেশ দেন।