কক্ষটির আয়তন দৈর্ঘ্যে ৪০ ফুট, প্রস্থে ৩০ ফুট। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত সুসজ্জিত কক্ষটির ভেতরের রং সাদা। বাইরের রং হালকা গোলাপি। কক্ষের ভেতরে লাল সালু দিয়ে ঘেরা বিচারকের বসার স্থান। এর সামনে পেশকারের বসার স্থান। এর দুই পাশে আসামি আর সাক্ষীর কাঠগড়া। বিচারকের ডানপাশে সরকারি কৌঁসুলির টেবিল-চেয়ার। বিচারপ্রার্থীদের বসার জন্য আছে কাঠের ২০টি বেঞ্চ। গণমাধ্যমকর্মীদের বসার স্থান রাখা হয়েছে।
কেরানীগঞ্জ কারাগারের ২ নম্বর ভবনকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে থাকা ১৭টি মামলার বিচারকাজ এই আদালতে অনুষ্ঠিত হবে।
কেরানীগঞ্জ কারাগারের স্থাপিত অস্থায়ী আদালতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলার বিচারকাজ শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৬ মে) অস্থায়ী এই আদালতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিসংক্রান্ত দুর্নীতি মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়াকে বৃহস্পতিবার এই আদালতে হাজির করা হয়নি। আগামী ১৯ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ঠিক করেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২ এর বিচারক এ এস এম রুহুল ইমরান।
এর আগে কেরানীগঞ্জ কারাগারের এই আদালতে ১৪ মে গ্যাটকো দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। আগামী ১৮ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ঠিক করেছেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩। আদালতকক্ষের সামনেই কেরানীগঞ্জের মহিলা কারাগার। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের বলেন, কেরানীগঞ্জের কারাগারে এত দিন নারী বন্দীদের রাখার জায়গা প্রস্তুত ছিল না। এখন তৈরি হয়েছে। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে সেখানেই রাখা হবে।
গত ১ মে পুরান ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউতে ভর্তি করা হয়। গত বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দণ্ডিত হন খালেদা জিয়া। পরে খালেদা জিয়াকে নাজিমুদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারে রাখা হয়। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে পরিত্যক্ত কেন্দ্রীয় কারাগারের কক্ষকে অস্থায়ী আদালত হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
কেন্দ্রীয় কারাগারের অস্থায়ী আদালত
হলুদাভ রঙের একটি কক্ষ। আয়তন দৈর্ঘ্যে ৫০ ফুট, প্রস্থে ২০ ফুট। দেয়ালে ১২টি টিউবলাইট, ৯টি ফ্যান। কক্ষের পূর্ব দিকে ৫ হাত দৈর্ঘ্যের লাল সালু। সেখানে রাখা একখানা টেবিল। পেছনে বিচারকের বসার চেয়ার। লাল সালুর দুই দিকে দুটি কাঠগড়া। ডানপাশেরটা সাক্ষীর, বাঁ পাশে আসামির। সাক্ষীর কাঠগড়ার কাছে সরকারি কৌঁসুলিদের বসার স্থান। ওই আদালতে বিচারপ্রার্থীদের বসার জন্য চেয়ার দেওয়া হয়। শুনানির দিন কারাগার থেকে এই আদালতে খালেদা জিয়াকে আনা হতো। অস্থায়ী এই আদালতে নাইকো দুর্নীতি মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আলীয়া মাদ্রাসায় অস্থায়ী আদালত
বিডিআর বিদ্রোহের ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে পুরান ঢাকার আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ আদালতে। এখনো বিস্ফোরক আইনের মামলার বিচারকাজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই আদালতে। আলিয়া মাদ্রাসার মাঠে স্থাপিত আদালতে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া কয়েকটি মামলার বিচার অনুষ্ঠিত হয়েছে। জিয়া অরফানেজ ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার শুনানি হয় এই আদালতে।