বাজারে থাকা বিভিন্ন কোম্পানির পাস্তুরিত দুধ, দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য ও পশুর খাদ্যপণ্যে ক্ষতিকর উপকরণ রয়েছে উল্লেখ করে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) প্রতিবেদন নিয়ে বিএসটিআই প্রশ্ন তোলায় অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার (২১ মে) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এই অসন্তোষ প্রকাশ করেন।
বিএসটিআই’র আইনজীবীকে উদ্দেশ করে আদালত বলেন, ‘আপনারা (বিএসটিআই) কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছেন, কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন না। আপনাদের পরীক্ষায় সত্য উদঘাটন হচ্ছে না কেন? শুধু এসি রুমে বসে থাকবেন তা হবে না। আন্তর্জাতিক পরীক্ষায় পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু আপনারা পারছেন না কেন ?’
আদালতে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। বিএসটিআই’র পক্ষে ব্যারিস্টার সরকার এম আর হাসান (মামুন), দুদকের পক্ষে সৈয়দ মামুন মাহবুব, আর রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না।
এর আগে ন্যাশনাল ফুড সেফটি ল্যাবরেটরির (এনএফএসএল) করা গবেষণার স্বপক্ষে ব্যাখ্যা দিতে সংস্থাটির প্রধান প্রফেসর ড. শাহনীলা ফেরদৌসী আজ (২১ মে) আদালতে হাজির হন। তিনি আদালতকে বলেন, ‘আমাদের পরীক্ষার ফল সঠিক আছে কিনা, তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যাচাই করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদন পাওয়ার পরই তা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রকাশ করা হয়। এক্ষেত্রেও সেটা করা হয়েছে।’
শুনানিকালে জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ল্যাবরেটরিতে নমুনা সংগ্রহ ও তা পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বিএসটিআইয়ের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেন আদালত। আদালত বলেন, ‘জনস্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ল্যাবরেটরি আন্তর্জাতিক চুক্তির আওতায় প্রতিষ্ঠিত। এ প্রতিষ্ঠান তার পদ্ধতিতে এবং আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে দুধ ও দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য ও পশুখাদ্য পরীক্ষা করেছে।’
আদালত বিএসটিআই’র আইনজীবী সরকার এম আর হাসানকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘অন্যের পরীক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন, আপনারা নিজেরা কেন পরীক্ষা করেন না? আপনারা কি এতদিনেও পরীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে পারলেন না? কাজ করার দায়িত্ব নিয়েছেন, কিন্তু দায়িত্ব পালন করছেন না। আপনাদের পরীক্ষায় সত্য উদঘাটন হচ্ছে না কেন? শুধু এসি রুমে বসে থাকবেন, তা হবে না। আন্তর্জাতিক পরীক্ষায় পাওয়া যাচ্ছে,কিন্তু আপনারা পারছেন না কেন?’
এ পর্যায়ে বিএসটিআইয়ের আইনজীবী যৌথ টিম গঠনের মাধ্যমে বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে তা পরীক্ষার নির্দেশনা চান।
পরে সারাদেশের বাজার থেকে বিভিন্ন কোম্পানির দুধ, দুগ্ধজাত খাদ্যপণ্য ও পশুর খাদ্যপণ্যে কী পরিমাণ ব্যাকটেরিয়া, কীটনাশক এবং সিসা মেশানো রয়েছে, তা নিরূপণসহ জরিপ করে একটি তালিকা ও জড়িতদের বিরুদ্ধে গৃহীত আইনি পদক্ষেপ প্রতিবেদন আকারে দাখিল করেতে পুনরায় নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।