মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের আপিল শুনানি শুরু হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আসা এটি দশম মামলা, যার শুনানি শুরু হল।
আজ মঙ্গলবার (১৮ জুন) সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন চার বিচারকের আপিল বেঞ্চে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা এ শুনানি শুরু হয়। বেঞ্চের অন্য তিন সদস্য হলেন- বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী, বিচারপতি জিনাত আরা এবং বিচারপতি মো. নুরুজ্জামান।
আসামির অ্যাডভোকেট অন রেকর্ড জয়নুল আবেদীন তুহিন শুনানি শুরুর আগে আরও সময় চেয়ে আবেদন করলে আপিল বেঞ্চ তা নাকচ করে দেয়।
প্রধান বিচারপতি বলেন, “এতদিন সময় দিলাম, আপনারা প্রস্তুতি নেননি কেন। আজই শুনানি শুরু করেন। পরে দেখা যাবে।”
এরপর আজহারের আইনজীবী জয়নুল আবেদীন তুহিন পেপারবুক থেকে উপস্থাপন শুরু করেন।
রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা শুনানিতে উপস্থিত রয়েছেন।
যুদ্ধাপরাধের বিচারে গঠিত আন্তর্জাতিক অপরধ ট্রাইব্যুনালে আজহারের মৃত্যুদণ্ডের রায় আসে ২০১৪ সালে। আইন অনুযায়ী ট্রাইব্যুনালের রায়ের এক মাসের মধ্যে খালাস চেয়ে আপিল করেন দণ্ডিত এই যুদ্ধাপরাধী।
এরপর ২০১৭ সালের ১৩ অগাস্ট এক আদেশে আপিল বিভাগ আসামিপক্ষকে আপিলের সার সংক্ষেপ দাখিলের নির্দেশ দেয়। ওই বছর ১০ অক্টেবর আপিলের ওপর শুনানি শুরুর কথা থাকলেও আসামিপক্ষের সময়ের আবেদনে তা পিছিয়ে যায়।
প্রায় দেড় বছর পর গত ১০ এপ্রিল মামলাটি সর্বোচ্চ আদালতের কার্যতালিকায় আসে। সেদিনই আপিল বেঞ্চ শুনানি শুরুর জন্য ১৮ জুন দিন ঠিক করে দেয়।
উল্লেখ্য, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে রংপুর অঞ্চলে ১২৫৬ ব্যক্তিকে গণহত্যা-হত্যা, ১৭ জনকে অপহরণ, একজনকে ধর্ষণ, ১৩ জনকে আটক, নির্যাতন ও গুরুতর জখম এবং শতশত বাড়ি-ঘরে লুণ্ঠন ও অগ্নিসংযোগের মতো ৯ ধরনের ৬টি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয় এটিএম আজহারের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগের মধ্যে ১ নম্বর বাদে বাকি পাঁচটি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে ট্রাইব্যুনালের রায়ে। সুপিরিয়র রেসপনসিবিলিটির (উর্ধ্বতন নেতৃত্বের দায়) অভিযোগ ছাড়াও তিনি যে আলবদর কমান্ডার ছিলেন তাও প্রমাণিত হয়েছে রায়ে।
২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারি ১১৩ যুক্তিতে আজহারকে নির্দোষ দাবি করে খালাস চেয়ে আপিল করেন তার আইনজীবীরা। আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় ৯০ পৃষ্ঠারমূল আপিলসহ ২৩৪০ পৃষ্ঠার আপিল দাখিল করেন।