বরগুনায় স্ত্রীর সামনে যুবককে নৃশংসভাবে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ঘটনাটিকে সমাজের অবক্ষয় ও ব্যর্থতার চিত্র বলে মন্তব্য করেন আদালত।
বরগুনার এ ঘটনাটি আজ বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) সকালে হাইকোর্টের নজরে আনেন এক আইনজীবী। তখন হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
এ সময় আদালত বলেন, প্রকাশ্য দিনের আলোয় এমন ঘটনা ঘটলো, ভিডিও করা হলো, ঘটনস্থলে লোকজন দাঁড়িয়ে থাকলো, অথচ কেউ সাহায্যের জন্য এগিয়ে আসেনি। এটা সমাজের অবক্ষয়ের চিত্র। সারাদেশের মানুষ এ হত্যাকাণ্ডে মর্মাহত। দিনের আলোতে এমন ঘটনা অবিশ্বাস্য বলেও মন্তব্য করেন হাইকোর্ট।
পাশাপাশি বরগুনায় প্রকাশ্যে সড়কে এক যুবককে তার স্ত্রীর সামনে কুপিয়ে হত্যার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। দুপুর ২টার মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এ বি এম আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাসারকে বরগুনার ডিসি ও এসপির কাছ থেকে এ বিষয়ে জেনে হাইকোর্টকে জানাতে বলা হয়েছে।
বুধবার সকালে বরগুনার কলেজ রোড এলাকার হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটির ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এ হত্যাকাণ্ডের প্রকাশিত প্রতিবেদন আজ (বৃহস্পতিবার) সকালে হাইকোর্টের নজরে আনেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল। পরে হাইকোর্ট স্বপ্রণোদিত হয়ে এ আদেশ দেন।
গতকালের ঘটনায় নিহত রিফাত শরীফ (২৩) সদর উপজেলার বুড়িরচর ইউনিয়নের বড় লবনগোলা গ্রামের দুলাল শরীফের ছেলে। মা-বাবার একমাত্র সন্তান ছিলেন রিফাত। হামলার পর গুরুতর অবস্থায় রিফাতকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে বরিশালের শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রিফাতকে কুপিয়ে হত্যার ভিডিওতে যে দুই যুবককে দেখা যায় তাদের একজনের নাম নয়ন বন্ড এবং আরেকজন রিফাত ফরাজী। তারা ছিনতাই ও মাদক ব্যবসাসহ নানা অপকর্মে জড়িত। এসব ঘটনায় তারা একাধিকবার পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন।
এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। রিফাতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে এ মামলা করেছেন। এ ঘটনায় চন্দন নামের এক যুবককে গ্রেফতারও করেছে পুলিশ।