বরগুনার রিফাত শরীফের ওপর হামলা চালানো হয়েছিল বেশ সাজিয়ে–গুছিয়েই। পুলিশ বলেছে, হত্যায় যুক্ত ছিলেন অন্তত ২০ জন। নিহত নয়নের গড়ে তোলা ফেসবুক গ্রুপ ‘বন্ড ০০৭ ’–এ বার্তা পেয়ে তাঁদের বেশির ভাগ হত্যার ঘটনাস্থলে এসেছিলেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন।
এ মামলায় এখন পর্যন্ত ১১ জন গ্রেপ্তার হয়েছেন, ৬ জন এরই মধ্যে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এর মধ্যে গতকাল শুক্রবার (৫ জুলাই) জবানবন্দি দিয়েছেন সাগর ও নাজমুল ইসলাম। এর আগে চন্দন, মো. হাসান, অলিউল্লাহ ও তানভীর হাসান জবানবন্দি দিয়েছেন। এই চারজনের মধ্যে প্রথম তিনজন এজাহারভুক্ত আসামি।
পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যে ছয়জন আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছেন, তাঁরা রিফাত শরীফকে কোপানোর সময় সেখানে উপস্থিত থাকার কথা স্বীকার করেছেন। ফেসবুকের মেসেঞ্জার গ্রুপ ‘বন্ড ০০৭ ’–এ বার্তা পেয়ে তাঁরা ঘটনাস্থলে হাজির হয়েছিলেন। হত্যা পরিকল্পনা সম্পর্কে গ্রুপে আগাম কোনো আলোচনা হয়নি। তাই তাঁরা জানতেন না। এই হামলার নেতৃত্বে ছিলেন সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড, রিফাত ফরাজী এবং রিফাতের ছোট ভাই রিশান ফরাজী। তাঁদের মধ্যে রিশান এখনো গ্রেপ্তার হননি।
এক কর্মকর্তা জানান, অলিউল্লাহ, তানভীরসহ অন্যরা জবানবন্দিতে বলেছেন, এই হামলায় ০০৭ গ্রুপের অন্তত ২০ জন ছোট দলে ভাগ হয়ে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেন। হামলার সময় পথচারী বা রিফাত শরীফের দলের কেউ যেন এগিয়ে আসতে না পারে, তা সামলানোর দায়িত্ব ছিল একটি দলের। আরেকটি দল নয়ন বন্ড, রিফাত-রিশান ফরাজীসহ অন্য হামলাকারীদের মোটরবাইকগুলো পাহারা দিচ্ছিল, যাতে হামলার পরে সবাই বিনা বাধায় পালাতে পারেন।
কেবল সম্পর্ক নিয়ে বিরোধের জেরে এত সাজানো–গোছানো হামলা হয়েছে বলে মনে করেন না স্থানীয় লোকজন। স্থানীয় সূত্রগুলো বলেছে, কয়েক মাস আগেও নয়নের দলের সঙ্গেই দেখা গেছে নিহত রিফাত শরীফকে। তবে সম্প্রতি নয়নের বিরোধী পক্ষের সঙ্গে ওঠাবসা করতে দেখা যায় রিফাতকে।
মামলার তদন্ত তদারক কর্মকর্তা বরগুনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান বলেন, আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে চার আসামি হত্যাকাণ্ডে নিজেদের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।