ঢাকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রী অধিকারীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলার দুই শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। আগামী ২৭ অক্টোবর মামলার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ঠিক করা হয়েছে।
আজ বুধবার (১০ জুলাই) ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. রবিউল আলম এই মামলার অভিযোগ গঠন করে সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেন।
মামলার অভিযুক্ত দুই আসামি হলেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখাপ্রধান জিনাত আখতার।
অভিযোগ গঠনের আগে দুই আসামি আদালতের কাছে নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।
গত বছরের ৪ ডিসেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী বাদী হয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ-শিক্ষকসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা করেন।
মামলায় অরিত্রীর বাবা দিলীপ অধিকারী অভিযোগ করেন, পরীক্ষা চলাকালে শিক্ষক অরিত্রীর কাছে মোবাইল ফোন পান। মোবাইলে নকল করেছে—এমন অভিযোগে অরিত্রীকে তার মা-বাবাকে নিয়ে স্কুলে যেতে বলা হয়। তিনি (দিলীপ অধিকারী) স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে স্কুলে গেলে ভাইস প্রিন্সিপাল তাঁদের অপমান করে কক্ষ থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। মেয়ের টিসি (স্কুল থেকে ছাড়পত্র) নিয়ে যেতে বলেন। পরে প্রিন্সিপালের কক্ষে গেলে তিনিও একই রকম আচরণ করেন। এ সময় অরিত্রী দ্রুত প্রিন্সিপালের কক্ষ থেকে বের হয়ে যায়। পরে বাসায় গিয়ে দিলীপ অধিকারীর দেখেন, অরিত্রী তার কক্ষে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে ওড়নায় ফাঁস দেওয়া অবস্থায় ঝুলছে। শান্তিনগরের বাসা থেকে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ৩ ডিসেম্বর বিকেল সাড়ে চারটার দিকে চিকিৎসকেরা অরিত্রীকে মৃত ঘোষণা করেন।
মামলার পরদিন শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনাকে গ্রেপ্তার করে আদালতে হাজির করে পল্টন থানা-পুলিশ। গত ৯ ডিসেম্বর আদালত থেকে জামিন পান তিনি।
মামলাটি তদন্ত করে গত ২৮ মার্চ ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস ও শাখাপ্রধান জিনাত আখতারের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। মামলা থেকে অব্যাহতি পান শ্রেণিশিক্ষক হাসনা হেনা।
অরিত্রী অধিকারী মারা যাওয়ার পর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ছাত্রীরা আন্দোলনে নামে। বিচার না হওয়া পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের কর্মসূচি দেয়। পরে আশ্বাসে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করে।