তথ্য গোপন করে মামলা বাতিলের আবেদন করায় দুর্নীতি মামলার আসামি মো. ফজলুল হক ও তার আবেদনের হলফকারী মো. আবুল হোসেনকে গ্রেফতার ও আদালতে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার ও কালীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে তাদের গ্রেফতার করে আগামী ২১ জুলাই হাজির করার নির্দেশ দেন আদালত।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. তানভীর আহমেদ।
এ মামলায় আসামি সাতক্ষীরা জেলার সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার মো. ফজলুল হককে ২০১৭ সালের ২৮ মে সাতক্ষীরা সিনিয়র জুড়িশিয়াল ম্যাজিস্টেট জামিন দেন। সেই জামিন আদেশের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরার সিনিয়র দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করে দুদক। রিভিশন শুনানি শেষে দায়রা জজ আদালত ২০১৮ সালের ১৮ জুলাই রিভিশন মঞ্জুর করেন এবং আসামির জামিন বাতিল করে তাকে ১৫ দিনের মধ্যে ম্যাজিস্টেট আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।
তবে ওই নির্দেশনা সত্ত্বেও আসামি আত্মসমর্পণ না করে দুদকের ওই রিভিশনের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা বাতিলের আবেদন করেন। ২০১৮ সালের ২৯ জুলাই করা ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে আদালত মামলাটি বাতিলের বিষয়ে রুল জারি করেন।
কিন্তু ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের নির্দেশনা সত্ত্বেও আত্মসমর্পণ না করে এবং তথ্য গোপন করে হাইকোর্টে নিয়ম বহির্ভূতভাবে মামলা বাতিলের আবেদন করার বিধান নেই। তাই শুনানিকালে বিষয়টি আদালতের নজরে এলে আসামি মো. ফজলুল হক ও তার জামিন আবেদনের হলফকারী মো. আবুল হোসেনকে হাইকোর্টে হাজির হতে নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু তারা হাজির না হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করে হাজির করানোর নির্দেশ দিলেন হাইকোর্ট।
প্রসঙ্গত, আসামি মো. ফজলুল হক সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন অফিসের স্টোর কিপার ছিলেন। দায়িত্ব পালনকালে তিনি ও সিভিল সার্জন ক্ষমতার অপব্যবহার করে ৭ কোটি ১০ লাখ ৪৩ হাজার ৭৪৫ টাকার মালামাল আত্মসাৎ করেন। এ অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. মাহতাব উদ্দিন ২০১৭ সালের ২১ মে সিভিল সার্জন ডা. সালাহ আহমেদ ও ফজলুল হককে আসামি করে সাতক্ষীরা সদর থানার মামলা দায়ের করেন। বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন অবস্থায় রয়েছে।