কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় পাকিস্তানের খাদিজা সিদ্দিকী এবং শাহ হুসেইনের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক শেষ হয়ে গিয়েছিল প্রায় সাত মাস আগে। কিন্তু এটি মেনে নিতে পারেনি শাহ হুসেইন। তাই ২০১৬ সালের ৩ মে তার ক্ষোভ সে প্রকাশ করেছিল আইনের ছাত্রী খাদিজাকে ২৩ বার ছুরিকাঘাত করে। এই ঘটনা পাকিস্তানে নারীর প্রতি সহিংসতার অনন্য প্রমাণ হয়ে ওঠে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে শুরু হয় প্রতিবাদ। বিচার শুরু হয় হুসেনের।
তবে খাদিজা সিদ্দিকী কিন্তু থেমে থাকেননি, চালিয়ে গেছেন পড়ালেখা। সম্প্রতি লন্ডনের সিটি ল স্কুল থেকে তিনি তার ডিগ্রি অর্জন করেছেন। খাদিজা এখন একজন ব্যারিস্টার।
১২টি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের পর খাদিজা ‘খুব সন্তোষজনক’ ফলাফল অর্জন করেছে বলে নিশ্চিত করেছে তার ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। খাদিজাও নিজের ফলাফল নিয়ে খুবই উচ্ছ্বসিত। নিজ দেশ পাকিস্তানে ফিরে তিনি আইন প্র্যাকটিস শুরু করতে চান।
খাদিজা বলেন, ‘আমি সবসময় বলেছি আমার পরিকল্পনা হলো পাকিস্তানের জনগণের জন্য কাজ এবং সংগ্রাম করা। আমি আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাকে সেই শক্তি দেন যেন আমি অসহায়ের কণ্ঠস্বর হতে পারি এবং নিকট ভবিষ্যতে পাকিস্তানে বিচারিক সংস্কার আনতে পারি।’
তবে ব্যারিস্টার হওয়ার পথে খাদিজার এই যাত্রা খুব সহজ ছিল না। তাকে হত্যাচেষ্টাকারী শাহ হুসেইনের সাত বছরের জেল হলেও হাইকোর্টের আদেশে ২০১৮ সালে সে ছাড়া পেয়ে যায়। তারপরও লড়াই থামাননি খাদিজা।
সুপ্রিম কোর্টে হাইকোর্টের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করেন তিনি। এই আপিলের চূড়ান্ত শুনানিতে অংশগ্রহণের জন্য বার (ব্যারিস্টার-অ্যাট-ল) পরীক্ষা চলাকালীনই তাকে পাকিস্তানে যেতে হয়। সেখানে সুপ্রিম কোর্ট শাহ হুসেইনকে গ্রেপ্তারের আদেশ দিলে খাদিজার তিন বছরের সংগ্রাম আলোর মুখ দেখে।