‘মিউট্যাটিস মিউটান্ডিস’ বইটি লিখেছেন নবীন আইনজীবী আইমান রহমান খান, যিনি ঢাকা জজ কোর্টে প্র্যাকটিস করেন। তিনি দেশের দুটি স্বনামধন্য ইংরেজি পত্রিকার নিয়মিত কলামিস্ট। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ‘ডন’ পত্রিকায় তার একটি লেখা ছাপা হয়েছে যা প্রশংসনীয়। এই বইটি তার প্রথম প্রকাশনা। বইটির নাম একটু ভিন্ন হওয়ায় গুগল করে বুঝতে পারলাম নামটির মাহাত্ম্য। এটি একটি ল্যাটিন লিগ্যাল শব্দ যার ইংরেজিতে মানে হচ্ছে “with the necessary changes having been made” যা বাংলায় “কিছু প্রয়োজনীয় পরিবর্তন করা সাপেক্ষে”। তারপর বুঝতে পারলাম এই বই দ্বারা লেখক কিছু আইনের পরিবর্তন সুপারিশ করছেন।
বইয়ের নামকরণ, প্রচ্ছদ দেখেই বিষয়বস্তু সর্ম্পকে কিছুটা আন্দাজ করা যায় যে এটি একটি আইনের বই। তবে অন্য দশটা মোটা আইনের বই থেকে এটা আলাদা কারণ এটি লেখা হয়েছে সকল পেশা নির্বিশেষে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে। অর্থাৎ এই বইটি পড়তে হলে আপনাকে বিজ্ঞ আইনজীবী বা আইনের ছাত্রও হতে হবেনা। আমি একজন এরোনটিকেল ইঞ্জিনিয়ার হয়েও এই বইটি পড়েছি, এবং বুঝেছি। অতি সরল ভাষায় লেখা এই বইটি বাংলাদেশের গতানুগতিক আইন ও সমাজব্যবস্থা নিয়ে কথা বলে যা এ দেশের প্রত্যেকটি সচেতন নাগরিকের জানা প্রয়োজন।
বইটিতে মোট ৩৩টি আর্টিকেল রয়েছে যা সমাজে ঘিরে থাকা বিভিন্ন সমস্যার আইনি সমাধান বের করে। ইংরেজিতে লেখা এই বইটিতে অনেক সমসাময়িক জটিল বিষয়গুলো খুব যুক্তিসঙ্গত ভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে।
বইটির মূল আইনি বিষয়গুলো বেশ সময়উপযোগী এবং ভিন্ন ভিন্ন শ্রেনীতে সাজানো। উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে নারী স্বাধীনতা ও তাদের অধিকার, নাগরিক চিন্তা চেতনা ও বাক-স্বাধীনতা, অগ্নি, পানি, বায়ু, খাদ্য নিরাপত্তা ও তার আইন, টর্ট আইনের অধীনে Negligence ও ক্ষতিপূরণ, পুলিশি হয়রানি ও আপনার অধিকার এবং এমন অনেক তথ্যবহুল লেখা।
উল্লেখ্য, এই ৩৩টি আর্টিকেলের মাঝে প্রথম ১০টাই নারীদের স্বাধীনতা ও অধিকার প্রতিষ্ঠায় আইনি পরামর্শ নিয়ে লেখা হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ে প্রাসঙ্গিক বাংলাদেশি আইনের ধারা তুলে ধরা হয়েছে এবং আর্টিকেল শেষে দেয়া হয়েছে সেই আইনটি সংশোধনের সুপারিশ।
বইটির মূল্য ৩০০টাকা হলেও বইটির কিছু তথ্য সত্যিই অমূল্য। একজন সচেতন নাগরিক তার চলার পথে সকল বাধা অতিক্রম করতে শুধুমাত্র তার অধিকার জেনে। “আইন জীবন চলার সর্বক্ষেত্রে প্রয়োজন” তা লেখক এই বইটির মাধ্যমেই বুঝাতে চেয়েছেন। বইটি পাওয়া যাচ্ছে ‘বুকওয়ার্ম বাংলাদেশ’ বুক শপ, ঢাকা জজ কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের সকল বই এর দোকানে।
লেখক : রাসেল খান, অ্যারোনটিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার।