ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বিলোপ নিয়ে সংসদের দুই কক্ষে শাসক ও বিরোধীর তুমুল বাগযুদ্ধ। গোটা দেশের রাজনীতিতে টানাপড়েন। এ বার লড়াই পৌঁছল আদালতের দরজাতেও। ‘ঐতিহাসিক’ এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছেন এক আইনজীবী। ফলে, এ বার কেন্দ্র সরকারের ওই পদক্ষেপ শীর্ষ আদালতে আইনি পরীক্ষার মুখে পড়তে চলেছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
প্রতিবেদনে বলা হয়, সংবিধানের ৩৭০ ধারা রদ নিয়ে সোমবার তোলপাড় হয়েছিল রাজ্যসভা। মঙ্গলবার একই মেজাজ দেখা গিয়েছে লোকসভাতেও। শাসক ও বিরোধীদের এই দ্বন্দ্বের মাঝখানেই ৩৭০ অনুচ্ছেদ বিলোপ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছেন এমএল শর্মা নামে এক আইনজীবী। শীর্ষ আদালতে রাষ্ট্রপতির ওই নির্দেশিকাকে ‘বেআইনি’ ঘোষণার আবেদন করেছেন তিনি। জরুরি ভিত্তিতে ওই মামলার শুনানির আবেদনও করেছেন তিনি।
কেন কেন্দ্র সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে আদালতে টেনে নিয়ে গেলেন আইনজীবী এমএল শর্মা? তাঁর যুক্তি, ৩৭০ অনুচ্ছেদ খারিজ করতে গেলে জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভায় তা নিয়ে আলোচনা করতে হত। কিন্তু, তা না করেই একতরফা ভাবে ওই অনুচ্ছেদ বাতিল করা হয়েছে বলে তাঁর অভিযোগ।
মোদী সরকারের অবশ্য যুক্তি, ৩৭০ অনুচ্ছেদ অস্থায়ী। তা যে কোনও সময় রদ হয়ে যেতে পারে। আর সেই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে রাষ্ট্রপতিকেই। সরকারের ব্যাখ্যা, জম্মু-কাশ্মীরে এখন আর বিধানসভা নেই। সেখানে রাষ্ট্রপতির শাসন চলছে। তাই রাষ্ট্রপতি ওই নির্দেশিকা জারি করেছেন।
সোমবারই প্রাক্তন আইএএস শাহ ফয়সলের তৈরি নতুন দল জম্মু-কাশ্মীর পিপলস মুভমেন্ট জানিয়েছিল, তারা এর বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে। ওই দিনই দলের নেত্রী শেহলা রশিদ বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতির নির্দেশিকাকে চ্যালেঞ্জ করে আমরা সুপ্রিম কোর্টে যাব।’’ তার আগেই অবশ্য শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন আইনজীবী এমএল শর্মা।
২০১৮ সালে সুপ্রিম কোর্টের একটি বেঞ্চ রায় দেয়, ৩৭০ অনুচ্ছেদ আর অস্থায়ী নয়। দীর্ঘদিন ধরে তা সংবিধানের অংশ হিসেবে থাকায় এখন তা প্রায় স্থায়ী অনুচ্ছেদেরই মর্যাদা পেয়েছে। ফলে, ওই রায়কে সামনে রেখেও আদালতে যুক্তি সাজানো হতে পারে বলে মনে করছেন আইনজীবীদের একাংশ।