বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের চিহ্নিত করতে কমিশন গঠনের ব্যাপারে সরকার নীতিগতভাবে একমত বলে জানিয়ে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, এ কমিশন হবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। কারণ এটি অত্যন্ত গুরু দায়িত্ব পালন করবে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা একসঙ্গে বসে কমিশনের কর্মপরিধি নির্ধারণের পাশাপাশি কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্য মনোনয়নের সিদ্ধান্ত নেবেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসের এক অনুষ্ঠানে এ সব কথা জানান আইনমন্ত্রী। ঢাকার তেজগাঁওয়ের সরকারি শিশু পরিবারে সোমবার (১৯ আগস্ট) আইন মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেড় শতাধিক অবহেলিত ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হয়।
এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমি একা এ সিদ্ধান্ত দিতে পারব না। তবে খুব শিগগিরই আমি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করব এবং আলোচনার পরে যে সিদ্ধান্ত সমষ্টিগতভাবে নেয়া হবে তা মিডিয়াকে জানানো হবে।’
তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত ও পলাতক সব আসামিকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছে সরকার। নিশ্চয়ই তারেক রহমানকে ফিরিয়ে এনে একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং মানি লন্ডারিং মামলায় সাত বছরের কারাদণ্ড প্রদানের রায় কার্যকরের চেষ্টা সরকার চালিয়ে যাচ্ছে এবং চালিয়ে যাবে।’
খালেদা জিয়ার কারা মুক্তির বিষয়ে বিএনপি আন্তর্জাতিক মহলের শরণাপন্ন হবে- এ তথ্য সাংবাদিকরা আইনমন্ত্রীকে জানালে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আসলে বাংলাদেশে বিশ্বাস করে না। তারা মৌখিকভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি করে। যখনই তারা ক্ষমতায় গেছে তখনই তারা বাংলাদেশের স্বার্থের সঙ্গে সংঘাতপূর্ণ কাজ করেছে।’
উদাহরণ হিসেবে আইনমন্ত্রী বলেন, ‘বিএনপি মুজাহিদ ও নিজামীকে মন্ত্রী বানিয়েছে। শাহ আজিজুর রহমানকে প্রধানমন্ত্রী করেছে। ইনডেমনিটি অর্ডিনেন্স করেছে। আজকেও তারা বিদেশিদের সঙ্গে কথা বলার যে হুমকি দিচ্ছে, সেগুলো তাদের সেই রাজনীতিরই ধারাবাহিকতা।’
তিনি বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে এতিমের টাকা চুরির দায়ে দুটি আদালত দেশের প্রচলিত আইনে সাজা দিয়েছেন। সরকারের এখানে কিছু করার নেই। ২০০৭ সালে এ মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় বহুবার হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগে হেরে যাওয়ায় বিচারিক আদালতে তার সাজা হয়েছে এবং সেটা আদালতেই শেষ হবে। আদালত যে সিদ্ধান্ত দেবে সেটাই সরকার মেনে নেবে এবং সেটা আদালতেই হবে।’
এর আগে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বঙ্গবন্ধুর নীতি ও আদর্শ তুলে ধরেন এবং শিশুদের বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করার পরামর্শ দেন।
অনুষ্ঠান শেষে তিনি তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবারের দেড় শতাধিক অবহেলিত ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুর মাঝে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন কার্যক্রম পরিদর্শন করেন এবং শিশুদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।
অনুষ্ঠানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ ও সংসদ বিষয়ক বিভাগের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ শহিদুল হক, আইন ও বিচার বিভাগের সচিব মো. গোলাম সারোয়ার এবং তেজগাঁও সরকারি শিশু পরিবার ও সমাজসেবা অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বক্তব্য দেন।