নেত্রকোনার দেওগাঁওয়ের কৃষক নান্দু মিয়া প্রতিপক্ষের রোষানলে পড়ে দেওয়ানী মামলা নিয়ে দীর্ঘ ১২ বছর বিচারিকসহ উচ্চ আদালতের বারান্দায় বারান্দায় ঘুরেছেন। ২০০৫ সালে প্রতিপক্ষ তার বিরুদ্ধে বণ্টনের মামলা দায়ের করে। নিম্ন আদালতের রায় তার পক্ষেই আসে। প্রতিপক্ষ থেমে থাকার লোক নয়, হাইকোর্টে রিভিশন দায়ের করেন তারা (দেওয়ানী রিভিশন নং-৩৮৫৪/২০০৮)। ২০১৪ সালে হাইকোর্ট রিভিশন মামলার রায়ও তার পক্ষে আসে। কয়েকদিন পরই তিনি জানতে পারেন প্রতিপক্ষ সুপ্রীমকোর্টের আপীল বিভাগে সিভিল পিটিশন ফর লিভ-টু আপীল ফাইল করেছে। আবার উচ্চ আদালতের বারান্দায় ঘুরতে থাকেন। এমতাবস্থায় সুপ্রীমকোর্ট বারের কিছু আইনজীবী তাকে সরকারী আইন সহায়তা অফিসে আসার পরামর্শ দেন। ’১৬ সালের ২৮ জুলাই লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে এলে তার কাছ থেকে সামগ্রিক বিষয় শুনে আইনজীবী নিয়োগ দেয়া হয়। মামলা দায়েরের পর উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক শুনে ’১৭ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি নান্দু মিয়ার পক্ষে সর্বোচ্চ আদালত রায় দেয়। দীর্ঘ ১২ বছরের মামলার চাপ থেকে নান্দু মিয়া এখন মুক্ত।
শুধু নান্দু মিয়া নয় উচ্চ আদালতসহ বিচারিক আদালতগুলোয় মামলা নিষ্পত্তির হার বেড়েছে। আগের তুলনায় মামলার নিষ্পত্তির হার বাড়লেও জট কমেনি। আগের তুলনায় মামলার সংখ্যা বাড়ছে। গত ১১ বছরে প্রায় সোয়া কোটি মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। আর এই সময়ে মামলা দায়ের হয়েছে প্রায় সাড়ে চার কোটি। বর্তমানে উচ্চসহ নিম্ন আদালতে প্রায় ৩৬ লাখ মামলা বিচারাধীন রয়েছে। বিচারাধীন মামলার শুনানি ও নিষ্পত্তি নিয়মতান্ত্রিক পর্যায়ে চললেও প্রতিদিন প্রায় ৩শ’ নতুন মামলা তালিকায় যুক্ত হচ্ছে। যেভাবে মামলার সংখ্যা বাড়ছে সেই অনুপাতে বিচারক সংখ্যা বাড়েনি। কয়েক বছর আগে মামলা জট নিরসনে আইন কমিশন ২৭ দফা সুপারিশ করে। কমিশনের মতে বিচারক সংকটেই মামলা জট হচ্ছে।
সুপারিশে বলা হয়েছিল, এক লাখ ৪৩ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে বিচারকের সংখ্যা মাত্র এক। এই বলয় থেকে বের হতে হলে এত অল্পসংখ্যক বিচারক দিয়ে মামলার জট কমানো সম্ভব নয়। এছাড়া সাক্ষীদের গরহাজির, আইনজীবীদের ইচ্ছাকৃত সময়ক্ষেপণ, বেঞ্চের বিচারক পরিবর্তন হওয়া ইত্যাদি নানা কারণে মামলা সময়মতো শেষ হচ্ছে না। ফলে মামলাজট বাড়ছে এবং তা কমাতে প্রধান বিচারপতির উদ্যোগের পাশাপাশি হাইকোর্ট অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু মামলা নিষ্পত্তির নির্দেশ দিয়েছে। একই সঙ্গে আইন মন্ত্রণালয় বিচারাধীন মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়েছে।
আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম জনকণ্ঠকে বলেন, আদালতে মামলা নিষ্পত্তি হচ্ছে। আরও বাড়লে ভাল হয়। এ ছাড়া আপীল ফাইলের পাশাপাশি জামিনের দরখাস্ত দেয়া হয়। অর্থাৎ এক মামলার ভেতরে থাকে তিনটি মামলা। এর ফলে মামলার সংখ্যা বেড়ে যায়। তিনটি না করে একটি মামলা করলেই মামলার সংখ্যা কমে যাবে। অন্যদিকে আদালত অনেক সময় তিন, চার ও ছয় মাসের জামিন দিয়ে থাকে। আমার মনে হয় এটা না করে পুরোপুরি জামিন দিয়ে দিলে সময় নষ্ট হবে না, ভোগান্তিও কমে যাবে। বারবার কাউকে আদালতে আসতে হবে না, এরপর পরবর্তী ধাপ দেখতে হবে।
সম্প্রতি জাতীয় সংসদে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ২০০৯ থেকে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত সারাদেশে আদালতগুলোয় এক কোটি এক লাখ ৩৭ হাজার ৭৬১ মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে। অন্যদিকে সুপ্রীমকোর্টের পরিসংখ্যানে জানা গেছে ২০০৮ থেকে ’১৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট মামলা নিষ্পত্তি হয়েছে এক কোটি ১৮ লাখ ৮৬ হাজার ৩২৬। আইনমন্ত্রী আরও জানান দেশের বিভিন্ন আদালতে ’১৯ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত বিচারাধীন মামলার সংখ্যা ৩৫ লাখ ৮২ হাজার ৩৪৭। বিচারাধীন মামলাগুলো দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে বর্তমান সরকার নানামুখী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি, নতুন আদালত সৃষ্টি, আদালতের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিচারকদের দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণ, মামলা নিষ্পত্তিতে তদারকি বৃদ্ধি করাসহ সরকারের গৃহীত পদক্ষেপে সাফল্য অর্জন এসেছে। আইন ও বিচার বিভাগ সারাদেশের বিচার ব্যবস্থার দীর্ঘসূত্রতা কমিয়ে বিচার ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও এজলাস সংকট নিরসনে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
সুপ্রীমকোর্টের মুখপাত্র সাইফুর রহমান বলেন, কয়েকটি উদ্যোগের ফলে মামলা নিষ্পত্তিতে এই ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন দায়িত্ব নেয়ার পর আদালতের পূর্ণ কর্মঘণ্টা কাজে লাগাতে সার্কুলার জারির আদেশ দেন। ওই সার্কুলার জারির পর বিচারপতি আগের চেয়ে বেশি সময় দেন বিচার কাজে। এর ফলে মামলা নিষ্পত্তিতে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে। পাশাপাশি বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সবাইকে ল্যাপটপ দেয়া হয়েছে, দফতরে ডেস্কটপ তো রয়েছেই। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা কাজে লাগানোয় মামলা নিষ্পত্তি আগের চেয়ে বেশি হচ্ছে।
সুপ্রীমকোর্ট লিগ্যাল এইড অফিসের কো-অর্ডিনেটর এ্যাডভোকেট রিপন বলেন, বর্তমান সরকার মানুষের আর্থ-সামজিক উন্নয়নের পাশাপাশি সবার ন্যায় সঙ্গত অধিকার প্রাপ্তিতে বিশ্বাসী। তাই কেউই যেন শুধু অর্থের অভাবে ন্যায় বিচারপ্রাপ্তির প্রবেশগম্যতায় বাধার সম্মুখীন না হয় সে জন্য সারাদেশের ন্যায় উচ্চ আদালতেও এই কার্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছে। এখান থেকে জনগণ ন্যায়বিচার পাচ্ছে, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি হচ্ছে।
সম্প্রতি ফুলকোট সভায় প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন সব বিচারপতিকে যথাযথ দায়িত্বপালনের নির্দেশ দেন। মামলাজট যাতে না বাড়ে সে বিষয়েও নজর দিতে বলেন। মামলা নিষ্পত্তির ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এক মামলার শুনানিতে মামলাজট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছিলেন, সুপ্রীমকোর্টে বর্তমানে এত মামলা যে ফাইল রাখার জায়গা নেই। এক কথায়- ক্রিটিকাল অবস্থা। এভাবে চলতে পারে না। এর সমাধান বের করতে হবে।
হাইকোর্ট বেঞ্চের কিছু নির্দেশনা
মামলাজট নিরসনে হাইকোর্ট বেঞ্চ বেশ কিছু দিকনির্দেশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পুরনো রিভিশন মামলার তালিকা করা, দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ১০ বছরের পুরনো ফৌজদারি মামলাগুলো ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ এবং দেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোতে বিচারাধীন ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা মামলার বিচারকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্ধারিত সময় ১৮০ দিনের মধ্যে সম্পন্ন করাসহ সাত দফা নির্দেশনা। গত ২৬ জুন বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ’১০ সাল পর্যন্ত সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে বিচারাধীন থাকা ফৌজদারি রিভিশন ও বিচারিক আদালতের মামলা বাতিল চাওয়া আবেদনের তালিকা তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। একইসঙ্গে তিন সপ্তাহের মধ্যে রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ওই তালিকা প্রধান বিচারপতির কাছে দাখিল করতে বলা হয়েছে। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি একই বেঞ্চ দায়রা জজ আদালতে বিচারাধীন ১০ বছরের পুরনো ফৌজদারি মামলাগুলো ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেয়। একইসঙ্গে ৩০ দিনের মধ্যে প্রত্যেক জেলা জজকে এসব মামলার তালিকা করে সুপ্রীমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কাছে জমা দিতে বলা হয়। তালিকা পাওয়ার পর রেজিস্ট্রার জেনারেল তা সুপ্রীমকোর্টের অধস্তন আদালত তদারকি কমিটির কাছে জমা দেবেন। ডাকাতি মামলার এক আসামির জামিন আবেদনের শুনানি শেষে সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
অন্যদিকে চলতি বছরের ১৮ জুলাই দেশের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালগুলোয় বিচারাধীন ধর্ষণ ও ধর্ষণের পর হত্যা মামলার বিচারকাজ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে নির্ধারিত সময় ১৮০ দিনের মধ্যে সম্পন্নসহ সাত দফা নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। একই সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের বিচারকদের সব ধরনের আইনী ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেন, তিন-চার বছরের বাচ্চারা ধর্ষিত হবে, মামলার বিচার তাড়াতাড়ি শেষ হবে না, এটা দুঃখজনক। আলাদা তিনটি ধর্ষণ মামলার আসামিদের জামিন শুনানিতে বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ এই নির্দেশ দেয়। ধর্ষণ কিংবা ধর্ষণ পরবর্তী হত্যা মামলার বিচার করতে নিম্ন আদালতের বিচারক, পাবলিক প্রসিকিউটর, সাক্ষী, পুলিশ, চিকিৎসক বা মামলার অন্যান্য বিশেষজ্ঞের প্রতি সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদের ক্ষমতাবলে এই সাত দফা নির্দেশ দেয়া হয়।
আইন কমিশনের সুপারিশ
মামলাজট নিরসনে আইন কমিশন কয়েক বছর আগে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক স্থায়ী কমিটিতে একটি বিস্তারিত সুপারিশ পেশ করেছে। ২৭ দফা সুপারিশের মধ্যে ছিল, জরুরী ভিত্তিতে কয়েক ধাপে ৩ হাজার নতুন জজ নিয়োগ। প্রতি জেলা সদরে নতুন এজলাস কক্ষ নির্মাণসহ ভৌত কাঠামো গড়ে তুলতে ও মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির লক্ষ্যে সমগ্র বিচার ব্যবস্থাকে ডিজিটাইজেশন করা। সহকারী জজসহ প্রত্যেক বিচারকের জন্য একজন করে দক্ষ স্টেনোগ্রাফার নিয়োগ দিতে হবে। বিচারকদের নিজ হাতে সাক্ষীর জবানবন্দী রেকর্ডের পরিবর্তে কম্পিউটার টাইপ চালু করা দরকার। একাধিক তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, অধিকাংশ বিচারক সকাল সাড়ে নয়টা এজলাসে ওঠেন না, অনেকে দ্বিতীয়ার্ধেও ওঠেন না। বিচারিক কাজের জন্য নির্ধারিত সময়টুকু যদি বিচারিক কাজে ব্যয় করা নিশ্চিত করা যায় তবে মামলা জট কিছুটা হলেও কমতে বাধ্য। সেক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিবেশে সান্ধ্যকালীন আদালত চালু করার আদৌ প্রয়োজন হবে না। দেওয়ানী রুলস ও অর্ডারসের ১২৫ নং রুল অনুযায়ী এবং ফৌজদারি রুলস ও অর্ডারসের ৩৩নং রুল অনুসারে মামলার চূড়ান্ত শুনানির দিনে সাক্ষ্যগ্রহণ আরম্ভ হলে সব সাক্ষীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দিনের পর দিন সাক্ষ্যগ্রহণ চলতে থাকবে। শুধু জরুরী কারণে মামলাটি স্বল্প সময়ের জন্য মুলতবি করা যেতে পারে। অধিকাংশ বিচারকই উল্লিখিত রুলের বিধান অনুসরণ করেন না। দেওয়ানী রুলস ও অর্ডারসের ৫০০ নং অনুযায়ী জেলা ও দায়রা জজ ও সমপর্যায়ের জেলা জজদের কর্মস্থল ত্যাগ করতে হলে তাদের অবশ্যই হাইকোর্ট ডিভিশনের রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত জানাতে হবে।
অন্যদিকে উচ্চ আদালতে মামলাজট কমাতে আইন কমিশনের সুপারিশগুলোর মধ্যে ছিল প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে একটি মনিটরিং সেল থাকবে, যা প্রধানত মামলা দাখিল ও নিষ্পত্তির সংখ্যা কি কি কারণে বৃদ্ধি পাচ্ছে তা নিরূপণ করে পদক্ষেপ নেবে। সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণে বিচারপ্রার্থী যাতে কোন টাউট বা দুর্নীতিবাজ কর্মচারীর খপ্পরে না পড়েন তা নিয়ন্ত্রণের জন্য রেজিস্ট্রারকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। কোন দেওয়ানী, ফৌজদারি মোশন দরখাস্ত বা সিআরপিসি এর ৫৬১ এ ধারামতে দরখাস্ত দাখিল করলে বিচারপতিরা প্রথমেই তার মেরিট যাচাই করবেন। মেরিটবিহীন দরখাস্ত হলে অবশ্যই সরাসরি খারিজ করবেন। নিম্ন আদালতের বিচাররাধীন কোন মামলার কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করলে অনিবার্য কারণেই নিম্ন ও উচ্চ আদালত এবং উভয়তেই মামলার ব্লকেজ সৃষ্টি হয়। এ বিষয়টি বিচারকদের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। পাশাপাশি মামলাজট নিরসনে কমিশন আরও কিছু সুপারিশ করে। এতে বলা হয়, প্রতিবছর মামলা-মোকদ্দমার সংখ্যা বিপুল হারে বাড়ছে কিন্তু বিচার বিভাগে নতুন কোন পদ সৃষ্টি হচ্ছে না। নিয়োগ পর্যায় থেকে শুরু করে প্রাতিষ্ঠানিক ও প্রায়োগিক প্রশিক্ষণ সম্পন্ন করে পরিপূর্ণ একজন বিচারক হিসেবে আদালতে কাজ শুরু করতে একজন ভাবী বিচারকের কমপক্ষে তিন বছর প্রয়োজন হয়। এর মধ্যে নতুন মামলা দায়ের থেমে থাকবে না বরং ল্ডমাগত বাড়তে থাকবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৩২ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে যেখানে ৮৬ হাজার বিচারক অর্থাৎ প্রতি ১০ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে একজন বিচারক কর্মরত। ভারতে ১২৫ কোটি জনসংখ্যার বিপরীতে বিচারক ছিল ১৫ হাজার ৬০৮ জন, অর্থাৎ প্রতি ৮০ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে বিচারক ছিল এক। ২০০৮ সালে প্রতি ২০ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে একজন বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা করে তারা কাজ শুরু করেন। ’১৩ সাল পর্যন্ত সেখানে ৬৭ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে একজন বিচারক নিয়োজিত করতে পেরেছে। বাংলাদেশে প্রতি এক লাখ ৪৩ হাজার জনসংখ্যার বিপরীতে বিচারকের সংখ্যা একজন। যে কোন বিবেচনায় এই সংখ্যা অত্যন্ত অপ্রতুল। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে বিচারকের পদ সৃষ্টির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা প্রয়োজন। সূত্র – জনকণ্ঠ