নারায়ণগঞ্জের টানবাজারে মাদকবিরোধী সভায় হামলা চালিয়ে আরজু বেগম নামে এক নারীকে হত্যা করা হয়েছিল ২৯ মার্চ রাতে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকায় অ্যাডভোকেট হামিদা খাতুন লিজা, তার ছোট বোন শিক্ষানবিশ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসমাসহ চার নারীকে ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। আসামিরা আইনজীবী হওয়ায় এখন নিহত আরজুর পরিবারের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। ওইসব মামলা মোকাবেলা করার জন্য আরজুর পরিবারের পক্ষে কোনো আইনজীবী আইনি লড়াই চালাতে রাজি হচ্ছেন না। সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে আরজুর পরিবারের সদস্যরা এ অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আরজু বেগম হত্যা মামলার বাদী নিহতের বড় বোনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন, বড় বোন পরী বেগম, স্বামী আক্তার হোসেন ও মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী লামিয়া আক্তার। আরজুর বড় বোন পরী বেগম বলেন, ঘটনার পর উল্টো আমাদের নামে দুটি মামলা দিয়ে হয়রানি করা হচ্ছে। আদালতে গেলে তাদের পক্ষে কম করে হলেও ১০০ উকিল দাঁড়ান। আমাদের পক্ষে শুধু এপিপি (রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি) দাঁড়ান। আর কোনো উকিল পাই না।
মামলার বাদী আরজু বেগমের বড় বোনের ছেলে সাদ্দাম হোসেন বলেন, এক উকিলের সঙ্গে কথা বলেছিলাম। তাকে আমাদের পক্ষে দাঁড়াতে বললে তিনি বলেন, কাক কখনও কাকের মাংস খায় না। আমি একজন আইনজীবী হয়ে আরেকজন আইনজীবীর বিপক্ষে দাঁড়াব না। বার থেকে নিষেধ করা আছে।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট হাসান ফেরদৌস জুয়েল বলেন, জেলা আইনজীবী সমিতির এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেই যে, আসামি আইনজীবী হওয়ায় বাদীপক্ষে কেউ লড়বে না। তাদের পক্ষে আদালতের এপিপি শামীম হোসেন রয়েছেন। অন্য আরও আইনজীবী নিয়োগ করতে চাইলে তারা আদালতে এসে পছন্দমতো আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে তাদের নিয়োগ দেবেন। এতে জেলা আইনজীবী সমিতির কোনো বাধা নেই।
গত ২৯ মার্চ টানবাজারের র্যালি বাগান এলাকায় মাদকবিরোধী সভায় হামলা চালিয়ে মাদক নির্মূল কমিটির সহসভাপতি আরজু বেগমকে হত্যা করা হয়। অ্যাডভোকেট হামিদা খাতুন লিজা ও তার ছোট বোন শিক্ষানবিশ আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসমার বিরুদ্ধে অভিযোগ, এলাকার মাদক ব্যবসায়ীদের কেউ গ্রেফতার হলে তাদের জামিনের ব্যবস্থা করেন তারা। এ কারণে ওই এলাকায় মাদক ব্যবসা বন্ধ হচ্ছিল না। তাই র্যালি বাগান এলাকার মাদক নির্মূল কমিটির পক্ষ থেকে অ্যাডভোকেট লিজা ও তার ছোট বোন আসমাকে অনুরোধ করা হয়েছিল, যাতে তারা মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা না করেন। এ নিয়ে লিজা ও তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে র্যালি বাগান মাদক নির্মূল কমিটির দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। সূত্র – সমকাল