কোনো মামলার শুনানিতে বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে কথোপকথন বা যুক্তি-তর্ক সংবাদপত্রে প্রকাশ করা যাবে না মর্মে নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।
সম্প্রতি হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের ‘আদেশের ভিত্তিতে’ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এ বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে বলে সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) এক তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়।
সেখানে বলা হয়, “এজলাস চলাকালীন বিচারক ও আইনজীবীদের মধ্যে কথোপকথন বা যুক্তি-তর্ক একান্তভাবে কোর্টের সম্পদ এবং এটি সংবাদপত্রে প্রকাশযোগ্য নয়।”
আদালত সম্পর্কিত সংবাদ প্রকাশ ও পরিবেশনের ক্ষেত্রে ১৯৯৩ সালে প্রণীত এবং ২০০২ সালে সংশোধিত ‘সাংবাদিকদের জন্য আচরণবিধির’ ১৬ দফা অনুসরণের জন্য সকল গণমাধ্যমকে অনুরোধ করা হয়েছে প্রেস কাউন্সিলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে।
আচরণবিধির ১৬ দফায় বলা হয়েছে, “কোনো অপরাধের ঘটনা বিচারাধীন থাকাকালীন সব পর্যায়ে তার খবর ছাপানো এবং মামলা বিষয়ক প্রকৃত চিত্র উদযাটনের জন্য আদালতের চূড়ান্ত রায় প্রকাশ করা সংবাদপত্রের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তবে বিচারাধীন মামলার রায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনা মন্তব্য বা মতামত প্রকাশ থেকে চূড়ান্ত ঘোষণার আগ পর্যন্ত বিরত থাকতে হবে।”
প্রেস কাউন্সিল বলছে, বিচারাধীন মামলার রায়কে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো বিষয় বা ঘটনা এবং বিচারকদের মানহানি ঘটে এমন কোনো মন্তব্য বা মতামত প্রকাশ থেকে গণমাধ্যমকে বিরত থাকতে হবে।
“বিচারাধীন মামলার বিষয়ে প্রকৃত চিত্র পরিবেশন করা যাবে। তবে কোনো বিষয়ে সন্দেহের উদ্রেক হলে তা সংশ্লিষ্ট কোর্টের বেঞ্চ অফিসার, হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার এবং আপিল বিভাগের কাছ থেকে যাচাই করে প্রকাশ করতে হবে।”
সুপ্রিম কোর্টের ‘অবমাননা’ হয় এবং বিচারকদের ‘মর্যাদা ক্ষুণ্ন হয়’ অথবা ‘ক্ষুণ্নের সম্ভাবনা থাকে’- এমন সংবাদ পরিবেশন থেকে সাংবাদিকদেরকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে।
প্রিন্ট মিডিয়া, ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া এবং অনলাইন মিডিয়াকে ‘অত্যন্ত সতর্কতার সাথে’ বিষয়টি ‘প্রতিপালন করার অনুরোধ’ জানিয়েছে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল।
এই নির্দেশনার ব্যাখ্যায় বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি রিট মামলার শুনানিতে গত ৭ অগাস্ট বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাই কোর্ট বেঞ্চ বিচারধানীন বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের বিষয়ে কিছু নির্দেশনা দেয়। তার ভিত্তিতে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল এই প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।