বহুকাল আগে থেকেই বিলেত থেকে আইন পড়াশোনা করে এসে বাংলাদেশে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন এমন অনেকেই আছেন। কিন্তু নব্বই দশকের আগে এর সংখ্যা ছিল অনেক কম। বাংলাদেশে মূলত নব্বই দশক থেকেই আগের তুলনায় বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী যুক্তরাজ্যের আইন বিষয়ে পড়াশোনার প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠে। নব্বই দশকের শুরুর দিকে বিলেতে গিয়ে পড়াশোনার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকেও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামের প্রচলন শুরু করে যুক্তরাজ্য। এই সুযোগ সৃষ্টি হওয়ার ফলে ইন্টারন্যাশনাল প্রোগ্রামে অনেক শিক্ষার্থী আইন বিষয়ে পড়াশোনা শুরু করে। আইনে সম্মান শেষের পর মেধাসম্পন্ন ও আর্থিকভাবে স্বচ্ছ¡ল শিক্ষার্থীরা যক্তরাজ্যে গিয়ে বার এট ল ডিগ্রি সম্পন্ন করে আসতে সমর্থ হন এবং পরবর্তীতে বাংলাদেশে এসে আইন পেশায় নিয়োজিত হন। আবার অনেকেই সম্মান শেষ করেই বাংলাদেশে আইন পেশায় জড়িয়ে পড়েন।
বাংলাদেশের আইন অঙ্গনে যুক্তরাজ্য অধীন বিশ্ববিদ্যালয় হতে আইন বিষয়ে অর্থাৎ ‘ইংলিশ ল’ পড়ুয়া আইনজীবীর সংখ্যা বর্তমানে অনেক। যেসব বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী হচ্ছেন ইউনিভার্সিটি অব লন্ডন ও ইউনিভার্সিটি অব নর্দামব্রিয়া থেকে। এছাড়া আরো যেসব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংলিশ ল পড়ুয়া শিক্ষার্থী আছেন সেগুলো হচ্ছে ব্রিস্টল, লন্ডন মেট্রোপলিটন, ম্যানচেস্টার, বিপিপি, ডার্বি, সাউথ ওয়েলস, সাউথ ব্যাংক ইত্যাদি। আইন অঙ্গনের বিভিন্ন প্রান্তরে, বিশেষ করে সুপ্রীম কোর্ট ও জেলা আদালতগুলোতে আইনজীবী হিসেবে ইংলিশ ল গ্রাজুয়েটদের সংখ্যা একেবারে কম নয়। কিন্তু কমন কোন প্লাটফর্ম না থাকার কারণে ইংলিশ ল গ্রাজুয়েটদের একে অপরের সাথে যোগাযোগ ও বন্ধনটা কম পরিলক্ষিত হয়। বাংলাদেশে সেই নব্বইয়ের দশক থেকে আজ অবধি পর্যন্ত পেশাগত উন্নয়ন, পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন কিংবা পারস্পরিক ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলার জন্য কোন এসোসিয়েশন গড়ে ওঠেনি।
একটি এসোসিয়েশনের অগাধ প্রয়োজনীয়তাকে অনুভব করে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু উদ্যমী ও তরুণ আইনজীবীর নিরলস শ্রম ও প্রচেষ্টায় ইংলিশ ল লইয়ার্স এসোসিয়েশন আত্মপ্রকাশ করেছে।
সুপ্রীম কোর্টের অ্যাডভোকেট লাউঞ্জে বুধবার (১৮ সেপ্টেম্ব) উক্ত এসোসিয়েশন এর ৩৫ সদস্য বিশিষ্ট আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত আহবায়ক কমিটির আহবায়ক হিসেবে ব্যারিস্টার অনিক আর হক এবং সদস্য সচিব হিসেবে ব্যারিস্টার আশরাফুল হাদী এবং কমিটির বাকি সকলকে সদস্য হিসেবে মনোনীত করা হয়। যথাসময়ে এসোসিয়েশনের গঠনতন্ত্র প্রস্তুত করে সংগঠনকে গতিশীল করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন আহবায়ক কমিটি।