বিয়ের প্রথা ভেঙে বরের বাড়িতে কনেযাত্রী

বিয়ের প্রথা ভেঙে বরের বাড়িতে কনেযাত্রী

বিয়ে করতে সাধারণত যাত্রী নিয়ে কনের বাড়িতে যান বর। বর্তমানে যুগ পাল্টেছে। আর যুগের সঙ্গে পাল্টে যাচ্ছে বিভিন্ন পুরনো প্রথাও। বিয়ের এই পুরনো প্রথা ভেঙে দিলেন মেহেরপুরের ছেলে আর চুয়াডাঙ্গার এক তরুণীর অভিভাবক। ঢাক-ঢোল পিটিয়ে, গানের তালে তালে গাড়ির সামনে কনে বেশে বসে বরের বাড়িতে গিয়ে বিয়ে করলেন তরুণী।

মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার চৌগাছা গ্রামে শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) ঘটনাটি ঘটেছে । সেখানে কনে পক্ষের শতাধিক কনেযাত্রীর সঙ্গে বরপক্ষের তিন শতাধিক আমন্ত্রিত অতিথি ছিল। আর এই বিয়ে দেখতে হাজির হয়েছিল বিভিন্ন বয়সের হাজার হাজার মানুষ।

পাত্রী চুয়াডাঙ্গার কামারুজ্জামানের মেয়ে খাদিজা আক্তার খুশি। সে বাড়ির ছোট মেয়ে। তাই তার বিয়েতে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা করতেই প্রথা ভেঙে অভিভাবকদের সম্মতিতে বরের বাড়িতে আসেন কনে। ফুল দিয়ে সজ্জিত একটি জিপ। সেই জিপের পেছনে বসে আছেন কনের বান্ধবী ও বোনেরা। আর কনে বসে আছেন জিপের সামনে। জিপে ফুল ভলিউমে বাজছে বিয়ের গান।

আর গানের তালে কোমর দোলাচ্ছেন কনেসহ তার বান্ধবীরা। জিপের নিচে নাচছেন কনের আত্মীয়-স্বজন। শুধু বর-কনে নয়; বিয়ের এমন সিদ্ধান্তে সম্মতি ছিল উভয় পরিবারের অভিভাবকদের।

এই বিয়ের পাত্র ছিলেন চৌগাছা গ্রামের আবদুল মাবুদের ছেলে তরিকুল ইসলাম জয়।

বিয়ে প্রসঙ্গে কনের বাবা কামরুজ্জামান বলেন, ছেলে-মেয়েদের সমঅধিকার বাস্তবায়নেই আমরা অভিভাবকরা এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে মেয়েকে ছেলের বাড়িতে এনে বিয়ের আয়োজন করি।

পাত্রের বাবা আবদুল মাবুদ জানান, ব্যতিক্রম সব সময়ই চমকের। প্রথা ভাঙতেই এমন আয়োজন। আগামীতে যাতে মেয়েরাও ছেলেদের বাড়ি এসে বিয়ে করতে উৎসাহী হয় এ জন্য এমন বিয়ের একটি ইতিহাস গড়তে চেয়েছিলাম। সফল হতে পেরে ভালো লাগছে।

বর তরিকুল ইসলাম বলেন, এটা একটা আনন্দের খবর যে, বরের বাড়িতে কনেযাত্রী এসে বরকে বিয়ে করে বাড়িতে নিয়ে যাবে। সেখানে আবার বউভাত না হয়ে বরভাত অনুষ্ঠান হবে। বিষয়টি বেশ আনন্দের এবং তিনি মনে করেন, পুরনো রীতি ভেঙে এ নতুন নিয়মে বিয়ে হওয়া উচিত। আগে বিয়ের পর মেয়েপক্ষ মেয়ে জামাতা আনতে যেত। এখন বিয়ের পর ছেলে কনে আনতে যাবে।

এই বিয়েতে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক রফিকুর রশীদ, বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য নূর আহমেদ বকুল, মেহেরপুর-২ গাংনী আসনের সাবেক এমপি মকবুল হোসেনসহ অনেক মান্যবর।