কোনো সরকারি কর্মচারীকে ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করতে সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি নেয়া-সংক্রান্ত সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ এর ৪১(১) ধারার বিষয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। রুলে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ এর ৪১(১) ধারা কেন বেআইনি ও বাতিল ঘোষণা করা হবে না এবং সংবিধানের ২৬ (১) (২), ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন আদালত।
জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (২১ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এ আদেশ দেন।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ সচিব, রাষ্ট্রপতি কার্যালয়ের সচিব, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, আইন সচিব এবং জাতীয় সংসদের স্পিকারকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী রিপন বাড়ৈ ও সঞ্জয় মন্ডল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ।
অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘২০১৮ সালের সরকারি চাকরি আইন ৪১(১) ধারায় বিশেষ সুবিধা দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৪ অক্টোবর জনস্বার্থে এ রিট করা হয়। শুনানি শেষে আজ আদালত রুল জারি করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘একই ধরনের সুযোগ দিয়ে ২০১৩ সালে দুদক আইনের ৩২(ক) ধারা প্রণয়ন করে। এরপর জনস্বার্থে রিট করলে আদালত আইনটিকে বৈষম্যমূলক বলে বাতিল ঘোষণা করেন। একই সুযোগ সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের দেয়ার জন্য ২০১৮ সালে প্রণীত ওই আইনের ৪১(১) ধারা আদালতের রায়ের পরিপন্থী।’
এর আগে হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি করেন আইনজীবী সরোয়ার আহাদ চৌধুরী, একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া ও মাহবুবুল ইসলাম।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সরকারি চাকরি আইনের গেজেট জারি হয়। এরপর ২০১৯ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর এক গেজেটে বলা হয়-১ অক্টোবর থেকে এ আইন কার্যকর হবে।
আইনের ৪১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কোনো সরকারি কর্মচারীর দায়িত্ব পালনের সহিত সম্পর্কিত অভিযোগে দায়ের ফৌজদারি মামলায় আদালত কর্তৃক অভিযোগপত্র গৃহীত হইবার পূর্বে, তাহাকে গ্রেফতার করিতে হইলে, সরকার বা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের পূর্বানুমতি গ্রহণ করিতে হইবে।’