জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) মাধ্যমে বিগত বছরের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে বই বিতরণে দুর্নীতি হয়েছে কি-না তা তদন্ত করে এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) এই প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
এক আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) হাইকোর্টের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
একইসঙ্গে নিম্নমানের কাগজ দিয়ে এনসিটিবি পাঠ্যপুস্তক তৈরি করে প্রকাশ করাকে কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষা সচিব, অর্থ সচিব, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব, এনসিটিবির চেয়ারম্যান, সচিব, দুদক চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
এর আগে এনসিটিবির দুর্নীতি তদন্ত চেয়ে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষে স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন হাইকোর্টে রিট করেন।
আইনজীবী জ্যোতির্ময় বড়ুয়া সাংবাদিকদের বলেন, কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে আদালতে আমরা রিট করেছি। আদালত আমাদের আবেদেনের শুনানি নিয়ে এনসিটিবির দুর্নীতি তদন্ত করতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন। একই সঙ্গে রুল জারি করেছেন।
তিনি জানান, এনসিটিবির দুর্নীতি তদন্তে বাংলাদেশ পেপার্স মিল অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশনের কাছে একটি আবেদন করা হয়। কনজিউমার অ্যাসোসিয়েশন এনসিটির কাছে আইনি নোটিশ পাঠায়। তাতেও কোনো ফল না হওয়ায় হাইকোর্টে রিট করা হয়।
জ্যোতির্ময় বড়ুয়া বলেন, শুনানিতে আদালতে বলেছি, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করার দায়িত্ব এনসিটিবির। তারা (এনসিটিবি) টেন্ডার আহ্বান করে। ওই টেন্ডারের মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতাদেরকে কাজ দেয়া হয়। আমরা গত বছরের টেন্ডার ডকুমেন্ট পরীক্ষা করে দেখেছি। সেখানে সেকশন ৭ এ পরিষ্কার করে লেখা আছে কাগজের মান কেমন হবে। তারা যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছেন বাজার থেকে তার নমুনা সংগ্রহ করেছি। সেটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান থেকে মতামত নিয়েছি। তাতে দেখা গেছে, বইগুলোতে যে কাগজ ব্যবহার করা হয়েছে তা একেবারে নিম্নমানের, যা নিয়ম অনুযায়ী হয়নি। এই নিম্নমানের কাগজ দিয়ে পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কারণে বাজার তুলনা করে দেখেছি, ১০৭ কোটি টাকার মত দুর্নীতি হয়েছে।