হায়দ্রাবাদের নওয়াব নাজাফ আলি খানের পক্ষ হয়ে ৭০ বছরের পুরনো মামলা লড়বেন বাংলাদেশের আইনজীবী তুরিন আফরোজ। ভারত-পাকিস্তানের মধ্যকার এই মামলা সম্প্রতি নিষ্পত্তি করেছে লন্ডনের রয়্যাল কোর্ট অব জাস্টিস। মামলায় ভারত জিতলেও সম্পত্তির মূল মালিক হায়দ্রাবাদের নওয়াব নাজাফ আলি খান রায়ের পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে আবেদন করেছেন। এরই মধ্যে ব্যারিস্টার তুরিন আফরোজকে আইনজীবী হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন নওয়াব।
১৩ নভেম্বর তুরিন আফরোজ তার ফেসবুকে লিখেন, ১২ নভেম্বর ভারতের হায়দ্রাবাদের নওয়াব নাজাফ আলি খান সাহেব (ভারতের হায়দরাবাদের সপ্তম নওয়াবের পৌত্র এবং প্রিন্স হাশাম জাহ বাহাদুরের পুত্র) আমাকে তার ‘‘লিগ্যাল এডভাইজার’’ হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। তবে, গর্বের বিষয় হলো লন্ডনের হাইকোর্ট অব জাস্টিসে বহুল আলোচিত ‘‘পাকিস্তান বনাম ভারত’’ মামলাটির শুনানিতে আমি নওয়াব সাহেবের পক্ষে আইনি লড়াই লড়বো।
তুরিন আফরোজ গণমাধ্যমকে জানান, গত ২ অক্টোবর এই মামলার রায় ঘোষণা করেছে ইংল্যান্ডের আদালত। এই রায়ের রিভিউ চেয়ে গত ৩০ অক্টোবর আবেদন করেছেন হায়দ্রাবাদের নওয়াব নাজাফ আলি খান। রিভিউতে লড়ার জন্য আইনজীবী হিসেবে তার সঙ্গে আমি চুক্তি করেছি। আগামী বছর ২০২০ সালের ৩০ জানুয়ারি রিভিউ শুনানির জন্য দিন ধার্য আছে। মামলার কৌশল নির্ধারণের জন্য নওয়াব নাজাফ আলী খানের সঙ্গে বসে পরামর্শ করতে হবে। সেজন্যে ডিসেম্বরে ভারতে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে আমার। তারপর মামলা মুভ করতে জানুয়ারিতে লন্ডনে যাব বলে স্থির করেছি।
গত ২ অক্টোবর আন্তর্জাতিক আদালতের ওই রায়ে বলা হয়েছে, হায়দ্রাবাদের সপ্তম নিজামের এই সম্পদে একমাত্র অধিকার ভারতের। এর পূর্ণ মালিকানা নিজাম ওসমান আলি খানের বংশধরদের। এই সম্পত্তির ওপর পাকিস্তানের কোনো অধিকার নেই।
দেশ ভাগের সময়ে (১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগ) হায়দ্রাবাদের সপ্তম নিজাম আশঙ্কা করেছিলেন, তার বিপুল সম্পত্তি হাত ছাড়া হয়ে যেতে পারে। লন্ডনে পাকিস্তানের দূতের হাতে তখন তিনি ১০ লাখ পাউন্ড নগদ দিয়েছিলেন। যা ওই দূত লন্ডনের ন্যাটওয়েস্ট ব্যাংকে গচ্ছিত রাখেন। সেই অর্থই এখন সুদে-আসলে সাড়ে তিন কোটি পাউন্ডে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় সাড়ে তিনশ কোটি টাকা।