১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কাল রাতে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মাত্র চার বছরের শিশু আজকের ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, এমপি। ১৯৭১ সালের ১৯ নভেম্বর জন্মগ্রহন করা এই আইনজীবীর আজ ৪৮তম জন্মদিন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস এমপি বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে আইন প্রণেতা হিসেবেও ভূমিকা রাখছেন।
শেখ ফজলে নূর তাপস পেশায় একজন আইনজীবী। তিনি ১৯৯৭ সালে ইংল্যান্ড থেকে বার এট ল ডিগ্রী লাভ করে বাংলাদেশে আইন পেশায় প্রবেশ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় সরকার পক্ষের আইনজীবী হিসেবে কাজ করেন। ২০০৭ সালে তৎকালীন সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করলে শেখ হাসিনার পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার তাপস এবং সবগুলো মামলায় বিজয় লাভ করেন। আওয়ামী লীগ সমর্থক আইনজীবীরা বঙ্গবন্ধু আইনজীবী পরিষদ ও আওয়ামী আইনজীবি পরিষদ নামে দুটি সংগঠনে দীর্ঘদিন যাবত বিভক্ত থাকার পরে দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে শেখ ফজলে নূর তাপসের নেতৃত্বে এক হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের এই সহযোগী সংগঠনের নাম “বঙ্গবন্ধু আওয়ামী আইনজীবী পরিষদ” এবং শেখ তাপস এর সদস্য সচিব। তাপস ২০০৮ সালে প্রথমবারের মত সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন এবং পরপর তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। তার নির্বাচনী এলাকা হলো ঢাকা-১০।
বাবা শেখ ফজলুল হক মণি ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাগ্নে এবং বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অন্যতম প্রধান গেরিলা বাহিনী মুজিব বাহিনী তার নির্দেশে ও প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে গঠিত এবং পরিচালিত হয়। তার সম্পাদনায় সাপ্তাহিক বাংলার বাণী পত্রিকা দৈনিকে রূপান্তরিত হয়। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে ঘাতকের গুলিতে বাবা শেখ ফজলুল হক মণিসহ অন্তঃসত্ত্বা মা আরজু মণিকে হারান অবুঝ দুই শিশু শেখ ফজলে শামস পরশ (৬) ও শেখ ফজলে নূর তাপস (৪)।
এক সাক্ষাৎকারে গণমাধ্যমের কাছে ব্যারিস্টার তাপস বলেন, ‘ছোট চাচা আমাকে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন আইন বিষয়ে পড়ার জন্য। আমার ইচ্ছা ছিল ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ার, সাইন্স খুব ভালো লাগত কিন্তু চাচা আমাকে আইন বিষয়ে লেখাপড়া করতে অনুপ্রাণিত করেছেন। পরবর্তীতে আমি সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি। আইন বিষয়ে পড়ালেখা করলে এবং আইন পেশায় আসলে হয়তো আমার সুযোগ আসতে পারে বাবার হত্যার বিচারের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার। সেই সুযোগ আমি পেয়েছি।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার আইনজীবী হিসেবে কাজ করতে গিয়ে নিজের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যেও ফেলেছেন আওয়ামী লীগ আইনজীবী পরিষদের সদস্য সচিব শেখ ফজলে নূর তাপস। দু’বার তিনি হামলার শিকার হয়েছেন। পুরানা পল্টনের বাংলার বাণী অফিসে তার ওপর সবচেয়ে বড় হামলার ঘটনা ঘটে। বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার রায় ঘোষণার আগেই ওই হামলার পরিকল্পনা করা হয়। অল্পের জন্য তিনি প্রাণে বেঁচে যান। এরপর হাজারীবাগের পার্কের মধ্যে দ্বিতীয় হামলার শিকার হন তিনি।