মানুষের জীবনরক্ষায় এবং নিরাপদ রেল চলাচল নিশ্চিত করতে দেশের রেল ক্রসিংয়ে গেটম্যান নিয়োগের পাশাপাশি অরক্ষিত গেট বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করা হয়েছে। একইসঙ্গে রেল লাইনের পাশে গড়ে ওঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশনাও চাওয়া হয়েছে রিটে।
আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী একলাস উদ্দিন ভূঁইয়া রিটটি করেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে চলতি সপ্তাহে রিট আবেদনটির ওপর শুনানি হতে পারে বলে রিটকারী আইনজীবী জানিয়েছেন।
রিটে মন্ত্রী পরিষদের সচিব, সড়ক ও জনপদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, রেলওয়ের মহাপরিচালক (ডিজি) ও পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) বিবাদী করা হয়েছে।
রিটে উল্লেখ করা হয়েছে, বর্তমানে বাংলাদেশে রেল বিভাগে এক হাজার ৪১২টি লেভেল ক্রসিং আছে। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সড়ক দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (এআরআই) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালে ২৩৫টি দুর্ঘটনায় ২৪৪ জন মানুষ মারা গেছে। এসময় ২২৮ জন মারাত্মকভাবে আহত হয়। ২০১৭ সালে ২১১টি দুর্ঘটনায় ২২৯ জন মারা যায় এবং ১৫৫ জন আহত হয়। ২০১৬ সালে ১০ মাসে ৫৬টি দুর্ঘটনায় ৫৯ জন মারা যায় এবং ৪৬ জন আহত হয়। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৫ জুলাই সিরাজগঞ্জ উল্লাপাড়ায় বর-কনেসহ ১০ জন মারা যায় এং পাঁচজন গুরুতর আহত হয়।
রিটকারীর ভাষ্য, বাংলাদেশ রেলওয়ে প্রকাশিত আগস্ট, ২০১৮ ডাটাবেজ অনুযায়ী, এক হাজার ২৪২টি রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৪৬৬টিতে গেটম্যান আছে এবং ৪৯৬টি ক্রসিং অরক্ষিত অবস্থায় আছে। তার মধ্যে রেলওয়ে ইস্ট জোনে ৪৩৪টি রেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ২৫৫টিতে গেটম্যান রয়েছে, বাকিগুলো অরক্ষিত অবস্থায় আছে। অথচ ‘বাংলাদেশ রেলওয়ে আইন, ১৮৯০’ এর ১৩, ১৪ এবং ১২৮ ধারায় রেলওয়েতে নিরাপত্তা নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।
রিট আবেদনে আরও বলা হয়, প্রতিদিন বহুলোক নিহত ও আহত হওয়ার ফলে সুখময় রেলযাত্রা ব্যাহত ও ঝুকিপূর্ণ অবস্থায় পতিত হচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের রেলওয়ে ডিভিশন এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদফতরসহ ৯টি ডিপার্টমেন্ট বৈধ ও অবৈধ রেল ক্রসিং সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এতসব দুর্ঘটনার পরেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থ্য নিচ্ছে না।