১২ কোটি টাকা ফি: আইনজীবীর বিষয়ে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট
ঊচ্চ আদালত

আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট

অর্থ পাচার রোধ, অনলাইনে জুয়া খেলাসহ বিভিন্ন অবৈধ খাতে ব্যয় নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।

জনস্বার্থে আজ রোববার (২৪ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় এ রিট মামলাটি দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোঃ মাহমুদুল হাসান। রিট মামলা নম্বর ১৩২৭২/২০১৯।

শিগগিরই হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে রিট আবেদনের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হবে বলে জানান রিটকারী আইনজীবী মাহমুদুল হাসান।

গত ১৪ নভেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংক এ সংক্রান্ত একটি সার্কুলার জারি করে। সার্কুলারে বলা হয়, এখন থেকে অনলাইনে কোন আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডে কোন লেনদেন করার ক্ষেত্রে গ্রাহকদের সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে নির্ধারিত ফরম জমা দিতে হবে এবং উক্ত ফরম অনুমোদন হওয়া সাপেক্ষে উক্ত অনলাইন ট্রানজেকশন কার্যকর হবে ।

বাংলাদেশে মূলত ফ্রিল্যান্সাররা ও বিদেশে ভ্রমণকারীগণ আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন। ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে সাড়ে ছয় লাখ নিবন্ধিত ফ্রিল্যান্সার রয়েছে যার মধ্যে পাঁচ লাখ ফ্রিল্যান্সার নিয়মিত কাজ করেন এবং প্রতিবছর এই ফ্রিল্যান্সাররা ১০০ মিলিয়ন ডলার উপার্জন করেন। এই ফ্রিল্যান্সাররা তাদের বিভিন্ন কাজের জন্য এই ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করেন যেমন সফটওয়্যার কেনা, বিভিন্ন সাবস্ক্রিপশন কিনা, ডোমেইন হোস্টিং কেনা, বিভিন্ন টুলকিট কেনা ইত্যাদি। এখন এই ফ্রিল্যান্সারদের যদি প্রত্যেকবার তাদের লেনদেনের জন্য ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হয় তাহলে ফ্রিল্যান্সাররা তাদের কাজ যথাযথ ভাবে করতে পারবেন না এবং কাজ হারাবেন, যা বাংলাদেশ সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদ ৪০ এর সরাসরি লঙ্ঘন।

অপরদিকে বাংলাদেশের নাগরিকগণ বিভিন্ন দেশে ভ্রমণের সুবিধার্থে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করে থাকেন। এক্ষেত্রে কোন ভ্রমণকারী যদি বিদেশে গিয়ে অনলাইনে বিমানের টিকিট বা হোটেল বুকিং দিতে চান সেক্ষেত্রে তিনি তা করতে পারবেন না । সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী, সংশ্লিষ্ট কার্ড হোল্ডারকে বিদেশে অবস্থান করেই বাংলাদেশে তার সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের কাছে আবেদন করতে হবে এবং অনুমোদনের পর তার লেনদেন কার্যকর হবে। এক্ষেত্রে কোন কারিগরি জটিলতায় লেনদেন সফল না হলে, বিদেশে ভ্রমণকারী বাংলাদেশীরা ভয়াবহ সমস্যার সম্মুখীন হবেন যা তাদের জীবনের প্রতি হুমকি ও বাংলাদেশে ফেরার পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে যা বাংলাদেশ সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার অনুচ্ছেদ ৩২/৩৬ এর সরাসরি লঙ্ঘন।

সার্কুলারে বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু অযৌক্তিক ব্যাখা দিয়েছেন বলেও রিটে উল্লেখ করা হয়। জুয়া খেলা, ভার্চুয়াল মূদ্রা ও অবৈধ লেনদেন বন্ধ করার জন্য এ সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ্য যে আন্তর্জাতিক ক্রেডিট কার্ডের লেনদেনগুলো মূলত ভিসা ও মাস্টার কার্ড পেমেন্ট গেটওয়ের মাধ্যমে হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক সংশ্লিষ্ট পেমেন্ট গেটওয়ে গুলোকে অবৈধ লেনদেন সংক্রান্ত মার্চেন্ট কোডগুলো ব্লক করার নির্দেশনা দিলেই সকল প্রকার অবৈধ লেনদেনগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হবে।