বার কাউন্সিলের কোনো পরীক্ষায় অংশ না নিয়ে এবং বিচারিক আদালতের আইনজীবী সদন না পেলেও একজনকে হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে সনদ দানের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের ওপর শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করেন হাইকোর্ট।
আবেদনটি শুনানির জন্য উপস্থাপন করা হলে আজ মঙ্গলবার (২৬ নভেম্বর) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ অপারগতা প্রকাশ করেন।
আদালত বলেন, এই রিট মামলা শুনতে আমরা অপারগতা প্রকাশ করছি।
জানা গেছে, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল থেকে হাইকোর্টের সনদ পাওয়া এই আইনজীবী সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতির ছেলে।
আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার অনিক আর হক, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান।
রিটকারী আইনজীবী জানান, আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্তির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হওয়ার পরও এক বিচারপতির ছেলেকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গেজেট প্রকাশের বৈধতা নিয়ে রিট শুনতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। তবে আমরা এ রিটের বিষয়ে আগামী সপ্তাহে রোববার (১ ডিসেম্বর) অন্য কোনো বেঞ্চে শুনানি করতে যাব।
রিট শুনানিতে অপারগতা প্রকাশ করার বিষয়ে রিটকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় অংশগ্রহনের জন্য ৬০ হাজার শিক্ষার্থী অপেক্ষা করছেন। সেখানে আমরা দেখলাম একজনকে বিনা পরীক্ষায় হাইকোর্টের আইনজীবী ঘোষণা করা হলো। এর কারণ বোধগম্য নয়।
কিন্তু রিটের বিষয়ে শুনানিতে বিব্রতবোধ করায় সায়েদুল হক সুমন আরও বলেন, এর আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মামলায় এবং তার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মামলায়ও বিচারক বিব্রতবোধ করেন। কারও মামলার শুনানিতে বিচারক ব্যক্তিগত কারণে বিব্রতবোধ করতেই পারেন। তবে আমরা অন্য একটি কোর্টে শুনানি করতে যাব।
এর আগে (২১ নভেম্বর) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।
রিট আবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল পরীক্ষায় কয়েকবার অংশ নিয়েও কৃতকার্য হতে পারেননি হাইকোর্টের বিচারপতির ছেলে মো. জুম্মান সিদ্দিকী। অথচ গত ১৯ সেপ্টেম্বর জুম্মান সিদ্দিকীকে সরাসরি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, যার গেজেট প্রকাশ করা হয় গত ৩১ অক্টোবর।
তাই রিটে ওই গেজেট এবং ১৯৭২ সালের বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অর্ডারের ২১(১)(খ) ও ৩০(৩) ধারা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে।
সে সময় সায়েদুল হক সুমন জানান, একজন আইনের ডিগ্রিধারীকে বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের রুল ও অর্ডারের বাইরে গিয়ে কোনোরকম পরীক্ষা ছাড়াই হাইকোর্ট বিভাগের আইনজীবী হিসেবে ঘোষণা করা হয়, যা বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের রুলস এবং অর্ডারের লঙ্ঘন। তাই বিষয়টি চ্যালেঞ্জ করে রিট করা হয়।
রিটে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান, বার কাউন্সিলের সচিব ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে বিবাদী করা হয়।