বিচারব্যবস্থার সংস্কারে সরকারি দলের মতের বিরুদ্ধাচরণকারী বিচারকদের সহজে বরখাস্ত করার সুযোগ রেখে করা একটি বিলে অনুমোদন দিয়েছে পোল্যান্ডের পার্লামেন্ট। শুক্রবার পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষে বিতর্কিত এ বিলটি ২৩৩-২০৫ ভোটে গৃহীত হয় বলে জানিয়েছে বিবিসি।
নিম্নকক্ষে পাস হওয়ায় বিলটি এখন উচ্চকক্ষে যাবে। দেশটির আইন অনুযায়ী, উচ্চকক্ষ বিলটি খারিজ করতে পারবে না, তবে চাইলে এর প্রয়োগে দেরি করিয়ে দিতে পারবে।
ইউরোপিয়ান কমিশন পোল্যান্ডকে তাদের বিচার ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানানোর কয়েক ঘণ্টা পর নিম্নকক্ষে এ ভোট হল।
পোল্যান্ডের ভেতরেও এই সংস্কার ও বিতর্কিত বিলটি নিয়ে তুমুল আলোচনা-সমালোচনা চলছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী বিলটির বিরুদ্ধে সমাবেশও করেছে। এছাড়া বিচারব্যবস্থার সংস্কারের কারণে পোল্যান্ডকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছাড়তে হতে পারে বলে বুধবার দেশটির সুপ্রিম কোর্টও সতর্ক করেছে।
ক্ষমতাসীন ল অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির (পিআইএস) আনা এ বিলটিতে ‘রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে’ যুক্ত বিচারকদের শাস্তি দেয়ার বিধান রাখা রয়েছে। ন্যাশনাল কাউন্সিলের মনোনীত বিচারকের বৈধতা নিয়ে অন্য কোনো বিচারক প্রশ্ন তুললে তার জরিমানা ও বেতন কাটা, এমনকি চাকরিচ্যুতিরও সুযোগ রয়েছে।
নিম্নকক্ষের সাংসদরাই যেন ন্যাশনাল কাউন্সিলের সদস্যদের মনোনয়ন দিতে পারেন সেজন্য গত বছর আইনও সংশোধন করেছিল পিআইএস।
ক্ষমতাসীন এ দলটি বলছে, দুর্নীতি দমন ও বিচার ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ করে তুলতেই তাদের এই সংস্কার প্রস্তাব। কমিউনিস্ট যুগ এখনও পোল্যান্ডের বিচারব্যবস্থাকে তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ পিআইএসের। ইউরোপের অনেকে দেশেই বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় রাজনীতিকদের অন্তর্ভুক্ত করা হয় বলেও দাবি রক্ষণশীল এ দলটির।
তবে সমালোচকরা বলছেন, এমন সংস্কার পোল্যান্ডের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতাকে খর্ব করবে।
২০১৫ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকে পিআইএস বিচারব্যবস্থার রাজনৈতিকীকরণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নই।
“পোল্যান্ডের বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা এমনিতেই ব্যাপক ঝুঁকির মধ্যে আছে। নতুন এ আইন ওই ঝুঁকি আরও বাড়িয়ে তুলবে,” বলেছেন জাতিসংঘ মানবাধিকার হাইকমিশনারের এক মুখপাত্র।