বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার ‘সার্টিফিকেট অফ প্র্যাকটিস’ (সিওপি) হাতে না-পাওয়ায় সমস্যায় পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের কয়েক হাজার নবীন আইনজীবী।
গত তিন বছরেরও বেশি সময় ধরে রাজ্য বার কাউন্সিল কোনও সিওপি দিতে পারেনি। অথচ, পেশাদার আইনজীবী হিসেবে মামলা লড়তে সিওপি অপরিহার্য। ফলে, আইনের স্নাতক কয়েক হাজার যুবা অল ইন্ডিয়া বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করার পরেও আইনজীবী হিসেবে আইনত প্র্যাকটিস করতে পারছেন না।
ওই জুনিয়র অ্যাডভোকেটরা জানাচ্ছেন, সিওপি ছাড়াই তাঁদের প্র্যাকটিস করতে হচ্ছে, তবে কেউ চ্যালেঞ্জ করলে তাঁরা বিপদে পড়ে যাবেন।
যদিও এক নবীন আইনজীবী তথ্য জানার অধিকারের ভিত্তিতে চিঠি দিলে বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া তার উত্তরে জানিয়েছে, নবীন আইনজীবীদের সিওপি-র প্রিন্টআউট গত অগস্ট মাসে রাজ্য বার কাউন্সিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। আবার রাজ্য বার কাউন্সিলের কর্তারা বলছেন, এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা চলছে, দ্রুত সমস্যার সমাধান করা হবে।
সল্টলেকের বাসিন্দা, আইনজীবী সৌরভ হালদার ২০১৭ সালে আইনে স্নাতক হন। তার পর তিনি অল ইন্ডিয়া বার কাউন্সিলের পরীক্ষায় পাশ করেন। কিন্তু তার পর দু’বছর গড়াতে চললেও ওই সার্টিফিকেট অফ প্র্যাকটিস (সিওপি) তিনি হাতে পাননি। সেপ্টেম্বর মাসে সৌরভ বার কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়াকে চিঠি দিয়ে জানতে চান, কবে তিনি সিওপি হাতে পাবেন। এর উত্তরে বিসিআই জানিয়ে দেয়, অগস্টেই তারা সিওপি-র প্রিন্টআউট রাজ্য বার কাউন্সিলে পাঠিয়ে দিয়েছে। এই প্রসঙ্গে বিসিআইয়ের আরও বক্তব্য, প্রতিটি রাজ্যের বার কাউন্সিলকেই তাদের প্রতিনিধি পাঠিয়ে ডিজিটাল সিওপির ডেমো দেখতে বিসিআইতে আসতে বলা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ বার কাউন্সিল সূত্রে জানা গিয়েছে, গত তিন বছরে এমন প্রায় কয়েক হাজার নবীন আইনজীবীর সিওপি দেওয়া যায়নি। দীর্ঘ দু’বছর বার কাউন্সিলের কোনও কমিটি নেই, সমস্যার কারণ সেটাই বলে সদস্যেরা জানাচ্ছেন।
এই প্রসঙ্গে কাউন্সিলের ভাইস প্রেসিডেন্ট সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘আমি এটা নিয়ে আলোচনার জন্য আমাদের চেয়ারম্যান এবং সব সদস্যকে চিঠি দিয়েছি। আমরা সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি। তবে সিওপি না-থাকলেও আমরা প্র্যাকটিস করার জন্য নতুনদের পরিচয়পত্র দিয়েছি।’
সিদ্ধার্থর দাবি, ‘ওই নথি হাতে থাকলে প্র্যাকটিস করতে নতুনদের কোনও বাধা থাকবে না।’
বার কাউন্সিলের এনরোলমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যান বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমরা দ্রুততার সঙ্গে এই সমস্যা সমাধানের সব রকম চেষ্টা করছি। যত দ্রুত সম্ভব সিওপি দেওয়া হবে।’
নবীন আইনজীবী অতনু ঘোষ, প্রসূন বৈদ্যরা অবশ্য বলছেন, রাজ্য বা দিল্লি কোনও বার কাউন্সিলেরই তরফে নবীনদের জন্য তেমন কোনও উদ্যোগ চোখে পড়ে না। তাঁদের কথায়, ‘দ্রুত সিওপি পেলে তবেই আমাদের প্র্যাকটিসের বৈধতা থাকবে। নচেৎ আমরা অবৈধ ভাবে প্র্যাকটিস করছি। আমরা চাইছি, বিষয়টির দ্রুত সমাধান হোক।’ সূত্র: এই সময়