বিচারকাজ পরিচালনায় বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় থাকা জরুরি। আর এই উদ্দেশ্য সামনে রেখে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হলো ঢাকা আইনজীবী সমিতি ও বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসে কর্মরত বিচারকদের মধ্যে এক অন্যরকম ক্রিকেট ম্যাচ।
ঢাকার গেন্ডারিয়ার মিল ব্যারাক পুলিশ লাইন মাঠে গতকাল শনিবার (৪ জানুয়ারি) এই প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।
সকাল থেকেই ওই মাঠে আসতে থাকেন আইনজীবী ও নিম্ন আদালতের বিচারকরা। ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ, সাবেক কর্মকর্তাবৃন্দ, জ্যেষ্ঠ আইনজীবীও সর্বস্তরের আইনজীবীরা হাজির হন নির্ধারিত সময়ের আগে। খেলোয়াড় তালিকাভুক্ত বিচারকসহ ঢাকায় ও বিভিন্ন জেলায় কর্মরত বিচারকরাও হাজির হন মাঠে।
সকাল ১১টায় খেলা শুরু হয়। আইনজীবী ক্রিকেট দল আগে ব্যাট করেন। পরে বিচারকদের দল ব্যাট করেন।
শুরুতে ব্যাট করে আইনজীবীরা টি টুয়েন্টির এই ম্যাচে ১০ উইকেটে ১৩৮ রান সংগ্রহ করেন। ১৭ ওভার ৫ বলে তারা এই রান তোলেন। জবাবে বিচারক দল ১৯ ওভার ১ বল ব্যাট করে তুলে নেন ১৪২ রান। শেষ বলে ছয় মেরে তারা জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যান।
ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম (সিএমএম) মো. জাহিদুল কবির তিন উইকেট পান। এ কারণে তিনি ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার পান। অবশ্য আরেকজন বিচারক মো. রিপন ৬৪ রান করায় তিনিও যৌথভাবে ম্যান অব দ্যা ম্যাচ নির্বাচিত হন। বিকাল ৩টার পরপরই খেলা শেষ হয়। ভাঙ্গে আইনজীবী-বিচারকদের মিলনমেলা।
বিচারক দলের অধিনায়কত্ব করেন ঢাকার সিএমএম মো. জাহিদুল কবির বিচারক দলের অধিনায়কত্ব করেন। আর আইনজীবী দলের অধিনায়কত্ব করেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য মাসুম মিয়া। বিচারক দলের সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করেন ঢাকার অতিরিক্ত সিএমএম কেশব রায় চৌধুরী ও এমএম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী।
বিচারক দলের ম্যানেজার ছিলেন ঢাকার অতিরিক্ত সিএমএম মো. কায়সারুল ইসলাম। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বার ও বেঞ্চের মধ্যে সেতু বন্ধন না থাকলে বিচার ব্যবস্থায় গতি আসে না। সেই সেতুবন্ধন যাতে আরও দৃঢ় হয় সেজন্য আয়োজন করা হয় একটি প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচের।
তিনি বলেন, বিচারকদের সাধারণত এ ধরণের খেলাধুলায় অংশগ্রহণের সুযোগ থাকে না। আইনজীবী-বিচারকদের মধ্যে এই খেলাটা বলতে গেলে একটা ঘরোয়া আয়োজন। সবাই খুব আনন্দের সঙ্গে খেলেছেন ও খেলা উপভোগ করেছেন।
আইনজীবী দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করেছেন ঢাকা আইনজীবী সমিতির কার্যকরী কমিটির সদস্য তানভীর আহমেদ সজীব। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, বার ও বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বজায় রাখার জন্য এই অন্য রকমের ক্রিকেট ম্যাচের আয়োজন করা হয়েছে। এই সম্পর্ক রও জোরদার হবে।
তিনি জানান, ঢাকা আইনজীবী সমিতির সভাপতি গাজী শাহ আলম, সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান খান রচি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান মামুনসহ সিনিয়র আইনজীবী ও সর্বস্তরের আইনজীবীরা খেলা উপভোগ করেছেন।
খেলা দেখতে মাঠে ছিলেন অ্যাডভোকেট শামসুজ্জামান দিপু। তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দারুণ উপভোগ করলাম। বিচারক-আইনজীবীরাও যে ভালো খেলতে পারেন আজকের ম্যাচ তার প্রমান দিয়েছে। খেলায় দারুণ উত্তেজনা ছিল। ছিল একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা। যখনই রান হয়েছে, যখনই উইকেট পড়েছে তখনই দর্শকরা করতালি দিয়ে স্বাগত জানিয়েছে খেলোয়াড়দের।’ সূত্র- কালের কণ্ঠ