বিয়ের প্রলোভন ও ভয় দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগে গ্রেফতার মিরপুর মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রকিব খান বাপ্পী জামিন পাননি।
আজ মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আবু সুফিয়ান মো. নোমান এ জামিন আবেদন খারিজ করে দেন।
আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী সজীব কুমার কুন্ডু জামিনের আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘আসামি সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ। পরিকল্পিতভাবে তাকে আসামি করা হয়েছে। চাকরি ও পারিবারিকভাবে তার মান-সম্মান ক্ষুণ্ন করতে কুচক্রি মহল বাদীকে দিয়ে মামলাটি করিয়েছেন।’
বাদীপক্ষের রবিউল ইসলাম রবি জামিনের বিরোধিতা করে বলেন, ‘বিয়ের কথা বলে এবং পুলিশ পরিচয় দিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক করে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে তা ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বাদীকে। এভাবে তাকে দীর্ঘদিন অনৈতিক সম্পর্ক করতে বাধ্য করে বাপ্পি। আসামি জামিন পেলে মামলার তদন্তে ব্যাঘাত ঘটবে এবং ভিকটিমের জীবন হুমকির মুখে পড়বে।’
এর আগে, গত ২ জানুয়ারি রাতে এক তরুণীর দায়ের করা মামলায় শেরেবাংলা নগর থানা পুলিশ বাপ্পীকে গ্রেফতার করে। পরের দিন তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে পাঠানোর আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা। অপরদিকে, বাপ্পীর পক্ষে আইনজীবী রবিউল ইসলাম জামিন আবেদন করেন। সেদিন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরী জামিন শুনানির জন্য ৭ জানুয়ারি দিন ধার্য করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণ এবং ভিডিওধারণ করে সামাজিক সম্মান ক্ষুণ্ন করার ভয় দেখিয়ে পুনর্ধর্ষণের অভিযোগ তুলেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ওই তরুণী।
অভিযুক্ত আব্দুর রকিব খান বাপ্পী মিরপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত। তার গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের তারাইলে।
ভুক্তভোগী তরুণীর অভিযোগ, বাপ্পী গত আড়াই বছর আগে এসআই হিসেবে পুলিশে যোগ দেন। কিন্তু তাদের মধ্যে প্রায় পাঁচ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছে। এরমধ্যে এসআই বাপ্পী একাধিকবার বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে তরুণীকে ধর্ষণ করেছেন। কিন্তু সম্প্রতি বিয়ে না করার জন্য টালবাহানা করছিলেন বাপ্পী।
২ জানুয়ারি সকালে এসআই বাপ্পী আগারগাঁও এলাকার একটি বাসায় তরুণীকে ডেকে নেন। সেখানে গেলে তিনি কিছু গোপন ভিডিও দেখান এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন।
সেখান থেকে ৯৯৯ নম্বরে কল করে ওই তরুণী শেরেবাংলা নগর থানায় অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাপ্পীকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে পুলিশ। এরপর দিনভর অভিযুক্তের পরিবারের পক্ষ থেকে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। সবশেষ তরুণীর অনড় অবস্থানের কারণে রাতে মামলা দায়ের হয়।