সংবিধান অনুসারে বয়স ৬৭ বছর পূর্ণ হওয়ায় অবসরে গেলেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী।
এ উপলক্ষ্যে বুধবার (৮ জানুয়ারি) তার শেষ কর্মদিবসে তাকে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয় এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। আইনজীবীদের সংবর্ধনার জবাবে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী এক আবেগঘন বক্তব্য দিয়েছেন।
এ দিন দুপুরে ২১ নম্বর (অ্যানেক্স) আদালত কক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল কার্যালয়ের পক্ষ থেকে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম এবং সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ এম আমিন উদ্দিন তাকে বিদায় সংবর্ধনা জানান।
অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম বিদায়ী বিচারপতিকে উদ্দেশ্যে করে বলেন, আপনি সুদীর্ঘ সময় কৃতিত্বের সঙ্গে হাইকোর্ট বিভাগে বিচারিক দায়িত্ব পালন করেছেন। আপনি ছিলেন আদর্শবান বিচারপতি। আপনি ধৈর্য ধরে মামলা শুনতেন এবং সব সময় চেষ্টা করতেন, ন্যায় সম্মত বিচার করতে। পরিশেষে, এ বিদায় বেলায় আপনার সুস্বাস্থ্য ও সুখী জীবন কামনা করে আপনার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে আমার বক্তব্য শেষ করছি।
বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী সিলেট জেলার কোতয়ালী থানার বিলপার লামাবাজার গ্রামে ১৯৫৩ সনের ৯ জানুয়ারি জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা মরহুম আবদুল ফাত্তাহ চৌধুরী ও মাতা মরহুম রওনোক আরা বেগম। তিনি ১৯৬৮ সালে এসএসসি এবং ১৯৭০ সালে এইচএসসি পাস করেন। এরপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে বিএ (অনার্স) ও এমএ এবং এলএলবি ডিগ্রি অর্জন করেন। এরপর তিনি ১৯৮২ সালের ১৭ মার্চ সহকারী জজ হিসেবে বিচার বিভাগে যোগদান করেন।
১৯৯৮ সালের ১ মার্চ তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৪ সালের ২৩ আগস্ট তাকে দুইবছরের জন্য হাইকোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০০৬ সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান তিনি। বুধবার পর্যন্ত তিনি হাইকোর্ট বিভাগে বিচারপতি হিসেবে নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী অবৈধ ও বাতিল করে রায় দেন। তিনি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্ট) সংক্রান্ত মামলার রায়, নদীকে জীবন্ত সত্ত্বা ঘোষণা এবং নদী দখলকারীদের দেশের সকল নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা, দেশের কোনো ব্যাংক থেকে তাদের ঋণ না দেওয়া, কিডনিসহ মানবদেহের অঙ্গ-প্রতঙ্গ প্রতিস্থাপন সংক্রান্ত রিট মামলার রায়, জনস্বার্থ ও পরিবেশ সংক্রান্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ রিট মামলায় রায় দিয়েছেন।