বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অ্যান্ড লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার অর্ডারস অ্যান্ড রুলস-১৯৭২ এ আইনজীবীদের সুরক্ষার বিধান সংযোজন করার নির্দেশনা কেন দেয়া হবে না- তাও জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।
এ-সংক্রান্ত এক রিটের শুনানি নিয়ে রোববার (১২ জানুয়ারি) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে, বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অ্যান্ড লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার অর্ডারস অ্যান্ড রুলস-১৯৭২ অনুযায়ী আইনজীবীদের সুরক্ষার বিধান সংযোজনের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার ব্যর্থতাকে কেন বে-আইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয় মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় সংসদের সচিব, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্ররকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ এম আমিন উদ্দিন এবং সম্পাদক এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন।
এর আগে গত ১২ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিনের পক্ষে রিটটি দায়ের করেন ব্যারিস্টার খন্দকার মোহাম্মদ মুশফিকুল হকসহ ছয় আইনজীবী।
আইনজীবী মো. জে আর খাঁন রবিন সাংবাদিকদের জানান, সুপ্রিম কোর্ট রুলস (হাইকোর্ট বিভাগ) ১৯৭৩ এর বিধি-৮ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মামলার সত্যায়িত অনুলিপি সংযুক্ত করে আদালতে যেকোনো ব্যক্তি কর্তৃক হলফ সম্পাদনের মাধ্যমে মামলা করা সম্ভব। এ সুযোগে দালালচক্র ও জালিয়াতচক্র অনেক সময় জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে সুবিধামতো কাগজ তৈরি করে যেকোনো একজন তদবিরকারীকে দিয়ে আইনজীবীদের কাছে পাঠান, আর আইনজীবী এসব কাগজ সংযুক্ত করে সরল বিশ্বাসে অনেক ক্ষেত্রে নামমাত্র ফি নিয়ে আদালতে মামলা দায়ের করেন।
তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে যদি এসব কাগজ জাল বলে আদালতে প্রমাণিত হয় তখন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী বিব্রতকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হন। যদিও এসব কাগজের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনজীবী অবগত থাকেন না বা দেখেও প্রতীয়মান করা সম্ভব না। অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আইনজীবীকে আত্মপক্ষ সমর্থনে সুযোগ প্রদান করা হয় না। তারপরও মামলা হলে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের সন্দেহের তির থাকে তদবিরকারক ও সংশ্লিষ্ট আইনজীবীদের বিরুদ্ধে এবং অনেক আইনজীবী এ ধরনের মিথ্যা মামলার জালে পড়ে নানারকম হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন।
বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অ্যান্ড লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার অর্ডার অ্যান্ড রুলস ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ১৭ ও ১৮ অনুযায়ী বাংলাদেশ বার কাউন্সিল, ট্রাইব্যুনাল, বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের কমিটি, বার কাউন্সিলের নিযুক্তীয় কর্মকর্তারা ও কর্মচারীদের দায়মুক্তির বিধান থাকলেও বিজ্ঞ আইনজীবীদের মামলা সংক্রান্ত সরল বিশ্বাসে কৃত কোনো কাজের জন্য দায় মুক্তির বিধান নাই যা সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক বলে উল্লেখ করেন জে আার খাঁন রবিন।
এসব কারণে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল অ্যান্ড লিগ্যাল প্র্যাকটিশনার অর্ডার অ্যান্ড রুলস ১৯৭২-এ আইনজীবীদের দায়মুক্তির বিধান সংযোজিত হলে আইনজীবীরা হয়রানির হাত থেকে রক্ষা পাবেন বলে মনে করেন রিটকারী আইনজীবী।