বেসরকারি এবি ব্যাংক থেকে বিপুল অংকের ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়ে পড়েছেন সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী ও সন্তান। খেলাপি ঋণ আদায়ে ব্যাংকের পক্ষ থেকে করা মামলায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। এখন গ্রেফতার এড়াতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন তারা।
এবি ব্যাংকের তথ্য বলছে, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা থেকে লতিফ সিদ্দিকী স্ত্রী ও দুই সন্তানের মালিকানাধীন দুটি প্রতিষ্ঠানের নামে প্রায় ৩৫ কোটি টাকা ঋণ নেয়া হয়। ধলেশ্বরী ও মেজেস্টিকা হোল্ডিং লিমিটেডের নামে বিপুল অংকের এ ঋণ নেন তারা। দীর্ঘদিন ঋণ পরিশোধ না করায় বর্তমানে তা ৫৫ কোটি ৬২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
ধলেশ্বরী লিমিটেডের চেয়ারম্যান লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী লায়লা সিদ্দিকী, ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তার ছেলে অনিক সিদ্দিকী এবং পরিচালক তার মেয়ে রাইনা ফারজিন। একইভাবে মেজেস্টিকা হোল্ডিং লিমিটেডেরও চেয়ারম্যন লায়লা সিদ্দিকী এবং এমডি অনিক সিদ্দিকী।
ব্যাংকের তথ্যে আরও দেখা যায়, দীর্ঘদিন ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে সম্প্রতি ব্যাংকের কারওয়ান বাজার শাখা উভয় প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে এনআই অ্যাক্টে মামলা করে। এরপর গত বছরের ২ ডিসেম্বর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত। সেই পরোয়ানা হাতে নিয়ে গতকাল বুধবার (১৫ জানুয়ারি) ঋণখেলাপিদের ধরতে তাদের গুলশানের বাসায় অভিযান চালায় পুলিশ। কিন্তু তাদের পাওয়া যায়নি। তারা শুধু এবি ব্যাংকের ঋণখেলাপি নয়, তারা জনতা ব্যাংক এবং পদ্মা ব্যাংকেও বিপুল অংকের ঋণখেলাপি বলে জানা গেছে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) তারিক আফজাল বলেন, ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ঋণ নিয়েছে তারা। সময়মতো পরিশোধ না করায় যা এখন সুদাসলে ৫৫ কোটি ৬২ লাখ টাকায় দাঁড়িয়েছে। পুরো টাকাই এখন মন্দমানের খেলাপি। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে ঋণের টাকা পরিশোধ না করে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। এখন প্রশাসন সহযোগিতা না করলে তাদের কাছে ঋণের টাকা আদায় করা সম্ভব নয়।
পুলিশের গুলশান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান জানান, সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীর স্ত্রী ও ছেলের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ আমরা পেয়েছি। কিন্তু তারা অনেক আগেই বিদেশে চলে গেছেন। বুধবার আমরা তাদের বাসায় গিয়ে শুধু সাবেক মন্ত্রীকেই পেয়েছি। তাকে পরোয়ানার কথা বলে এসেছি।
এসব বিষয়ে জানতে ধলেশ্বরী ও মেজেস্টিকা হোল্ডিং লিমিটেডের এমডি অনিক সিদ্দিকীর সঙ্গে মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি ফোন ধরেননি।