শিশু ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে তার লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা ও প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হয়েছে।
আজ রোববার (২৬ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান এই রিট দায়ের করেন। রিট আবেদনের ওপর বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো.মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানি হতে পারে।
এর আগে গত ১ ডিসেম্বর রেজিস্ট্রি ডাকযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এ বিষয়ে একটি নোটিশ পাঠান।
ইশরাত হাসান তখন সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন, ‘আমাদের দেশে এখনও বেশিরভাগ মানুষ ছেলে সন্তান কামনা করে। তারা মনে করেন, ছেলেরা বংশের ধারক, তারা আয় করে, বেশি শক্তিশালি। এমন কী অনেক নারীও ছেলে সন্তান তাদের ভবিষ্যতের জন্য সুরক্ষা হবে বলে মনে করেন।’
তিনি বলেন, ‘এ অবস্থায় পরীক্ষার মাধ্যমে যদি গর্ভজাত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানা যায় এবং তা মা-বাবার কাছে কাঙ্ক্ষিত শিশু না হয়, সেক্ষেত্রে অন্তঃসত্ত্বা মায়ের শারীরিক ও মানসিক অবস্থার ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করে। তাই ওইসময় অন্তঃসত্ত্বা মা যদি হতাশায় ভোগেন, তবে তার প্রভাব অনাগত শিশুর ওপরও পড়তে থাকে। চীন-ভারতসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। তাই বাংলাদেশে নারী ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে গর্ভজাত শিশুদের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ হওয়া জরুরি।’
তবে অন্তঃসত্ত্বা মা ও শিশুর কল্যাণের জন্য,বা অনাগত সন্তানের সুস্থতা জানতে তারা যেকোনও পরীক্ষা করতেই পারেন। সেক্ষেত্রে শিশু লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে ডাক্তারী পরীক্ষা বা ডাক্তারী পরীক্ষার রিপোর্টে শিশু লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ কারণেই এ নোটিশ পাঠানো হয়েছে বলেও আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান।
নোটিশে তিন মন্ত্রণালয়কে তিন দিনের মধ্যে সব সরকারি-বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক ও ক্লিনিক কর্তৃপক্ষকে গর্ভজাত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা বা লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করতে বলা হয়েছে। অন্যথায় প্রতিকার চেয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও নোটিশে উল্লেখ করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় হাইকোর্টে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে এ রিট দায়ের করা হলো।