রাজউক ও দুর্নীতিকে সমার্থক হিসেবে আখ্যায়িত করেছে দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা ট্রান্সপারেসি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান।
আজ বুধবার (২৯ জানুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডিস্থ মাইডাস সেন্টারে টিআইবি কার্যালয়ে রাজউক নিয়ে টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশকালে তিনি এ আখ্যা দেন। ‘রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক): সুশাসনের চ্যালেঞ্জ উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘রাজউক আর দুর্নীতি একাকার, সমার্থক অর্থেই ব্যবহৃত হয়। রাজউক নিজেদের দায়িত্ব ভুলে গিয়ে এখন ব্যবসায়ী, মুনাফাকারী প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তাদের দায়িত্ব হলো নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা রাখা। কিন্তু তারা রক্ষক থেকে ভক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে।’
রাজউকের তীব্র সমালোচনা করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘রাজউকের গোড়ায় গলদ। এজন্যই দুর্নীতি অনিয়ম বেশি। তাদের কর্মকাণ্ডে জবাবদিহিতা নেই। নিয়োগ থেকে শুরু করে প্রতিটা খাতে দুর্নীতি। এখন সময় এসেছে নতুন স্বাধীন একটি প্রতিষ্ঠান করার। নির্বাচন কমিশন কিংবা দুদকের মতো নামেই স্বাধীন প্রতিষ্ঠান করলে কোনো লাভ হবে না। সত্যিকার অর্থেই একটি স্বাধীন প্রতিষ্ঠান যেন হয়, যারা নিয়ন্ত্রকের ভূমিকায় থাকবে।’
‘রাজউকের বোর্ডে যারা নিয়োগ পান, তাদেরকে কী ধরনের মাপকাঠিতে নিয়োগ দেওয়া হয়? কোনো যোগ্যতা নির্ধারিত না থাকায় রাজনৈতিক নেতাদের জন্য এটি এক আকর্ষণীয় পদ। রাজউক একটা জায়গায় সফল, তারা মুনাফা অর্জনকারী প্রতিষ্ঠান, সেটার কারণেই তারা রক্ষক থেকে ভক্ষক। তারা এতো দিনেও জনবান্ধব হতে পারেনি। রাজউক আর দুর্নীতি একাকার, এ ধারণা এখন প্রতিষ্ঠিত হয়ে গেছে’, যোগ করেন তিনি।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘আমরা ১৪ দফা সুপারিশ করেছি। রাজউকের দায়িত্ব অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে হস্তান্তর জরুরি। স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা দরকার। দরকার আর্থিক ব্যবস্থাপনায় স্বচ্ছতা। রাজউককে প্রাতিষ্ঠানিক হতে হবে। জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে হবে। নিয়ন্ত্রকের ভূমিকা পালন করতে হবে তাদের। তাহলেই তা সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান হবে। সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন সময় জবাবদিহিতার কথা শুনি, সেটা অঙ্গীকার। বাস্তবায়ন আর অঙ্গীকার দুটো ভিন্ন জিনিস।’
রাজউকের কোন কর্মকর্তারা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত এসব বিষয়ে তথ্য আছে কী না জানতে চাইলে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘ব্যক্তির দুর্নীতি প্রকাশ করা টিআইবির দায়িত্ব নয়, এটা রাষ্ট্র তথা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান বা আইনশৃংখলা বাহিনীর দায়িত্ব। রাজউকের দুর্নীতি রোধে দুদকের প্রাধান্য দেওয়া উচিত।’