বরগুনার রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় স্ত্রী আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির আদালত পরিবর্তন চেয়ে করা আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আজ বৃহস্পতিবার (৫ মার্চ) বিচারপতি একে এম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি এসএম মুজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আবেদনটি খারিজ করে দেন।
এর আগে গত ৯ ফেব্রুয়ারি মামলাটি বরগুনার দায়রা জজ আদালত থেকে ঢাকার দায়রা জজ আদালতে বদলির জন্য হাইকোর্টে আবেদন করা হয়।
এরআগে গত ২১ জানুয়ারি রিফাত শরীফ হত্যা মামলার অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ ও মামলা বাতিল চেয়ে করা রিফাতের স্ত্রী মিন্নির আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করেছিলেন হাইকোর্ট। মিন্নির আইনজীবীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি একে এম আসাদুজ্জামানের ও বিচারপতি এস এম মজিবুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই আদেশ দিয়েছিলেন।
গত বছরের ২৬ জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্য দিবালোকে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
এ ঘটনায় গত বছরের ২৭ জুন সকালে নিহতের বাবা দুলাল শরীফ বাদী হয়ে প্রথমে ১২ জনের নাম ও বেশ কয়েকজনকে অজ্ঞাত উল্লেখ্য করে বরগুনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। গত ২ জুলাই ভোরে মামলার প্রধান আসামি নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়।
চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকাণ্ডের পর মিন্নির সঙ্গে খুনি নয়ন বন্ডের বিভিন্ন ভিডিও, অডিও ও ছবি ভাইরাল হলে তাকে ঘিরে নানা আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। পরে ১৬ জুলাই সকালে মিন্নিকে তার বাবার বাড়ি বরগুনা পৌর শহরের নয়াকাটা-মাইঠা এলাকা থেকে পুলিশ লাইন্সে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে আসা হয়।
এরপর দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ শেষে রাত ৯টায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়। পরে তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। তখন স্বামী রিফাত হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন তিনি। এরপর কয়েকদফা আবেদন জানালেও নিম্ন আদালতে জামিন মেলেনি মিন্নির। পরে একই মামলায় গত ২৯ আগস্ট মিন্নি হাইকোর্টে জামিন পান।
গত ১ জানুয়ারি আয়শা সিদ্দিকা মিন্নিসহ মামলার ১০ প্রাপ্তবয়স্ক আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনা জেলা ও দায়রা জজ আদালত। এরপর ৮ জানুয়ারি অপ্রাপ্তবয়স্ক ১৪ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন বরগুনার শিশু আদালত। তবে গত সপ্তাহে বরগুনার আদালতে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।